• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

কোটি টাকার বাজি পুড়ল

সমীক্ষার ফল দেখাল দূষণের মাত্রার নিরিখে দিল্লি শীর্ষে। এই সংস্থা দশটি দেশের  তালিকা প্রকাশ করেছে। মুম্বইয়ের স্থান পাঁচে। আর আটে তিলোত্তমা কলকাতা।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দীপাবলির দু’দিনে কয়েকশো কোটি টাকার শব্দবাজি এবং নিষিদ্ধবাজি পুড়ল। তার সঠিক হিসেব পাওয়া যাবে না কোনওভাবেই। তবে এই বাজির দাপটেদূষণের মাত্রা ভয়াবহরূপে বেড়ে গেল। বিশেষজ্ঞরা আতঙ্কিত এর পরিণাম কী হবে তা ভেবে।সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, পুলিশের নজরদারিকে অগ্রাহ্য করে বাজি ফাটানো হল দেদার!কেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নির্বাক দর্শকের মতো তা দেখল। পর্ষদের এক কর্তা অবশ্য বললেন,মানুষের বিবেক যদি জাগ্রত না হয় তবে দীপাবলিতে শব্দবাজির এই দৌরাত্ম্য বন্ধ করারকোনও উপায় নেই। কালীপুজোর রাতে যত শব্দবাজি ফাটানা হল, তার পরের দিন যেন অর্থাৎ মঙ্গলবারআরও বেশি বাজি ফাটানো হল। এমনকি বৃহস্পতিবারও এই বাজির তাণ্ডব চলবে। কলকাতাপুলিশের বড় কর্তাদের সব নির্দেশ এবং তাদের নজরদারি উড়িয়ে দিয়ে বাজি ফাটানো হল।

এই শব্দবাজির তাণ্ডল চলল কলকাতার মেডিকেল কলেজ ওহাসপাতালগুলির সামনে। ফলে যাঁরা মুমূর্ষ রোগী, যাঁরা হৃদরোগে ভুগছেন, তাঁদেরচিকি!সা ব্যাহত হল। এই বাজির দাপট প্রমাণ করল প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষে এই নিষিদ্ধশব্দবাজি ফাটানো বন্ধ করা অসম্ভব। কলকাতা পুলিশ অসহায় হয়ে দেখল বিভিন্ন আবাসন ওঅলিগলি থেকে শব্দবাজি ফাটানো হচ্ছে। তারা খোঁজ করেও যারা শব্দবাজির খেলায় রত তাদেরধরতে পারল না। দীপাবলির আগের থেকেই কলকাতা পুলিশের নিষিদ্ধ বাজি কোথা দিয়ে ঢুকছেতা আটকাতে চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু ওই চেষ্টাই সার—শব্দ বাজি শহরে ঢুকছে পুলিশের নজরদারিকে পাত্তা না দিয়ে। একজন পরিবেশবিদ বললেন, গত দু’বছর দীপাবলিতে শব্দবাজিরতাণ্ডব কিছু কম ছিল। আশা করা গিয়েছিল এ বছর তা আরও কমবে। কিন্তু তা না কমে এবারআরও অনেক বেশি বাজি ফাটানো হল। সুতরাং শহরের দূষণের মাত্রা ভয়াবহ রূপে বেড়ে গেল। কেউ কেউ বলেন, শব্দবাজি কোথায় তৈরি হচ্ছে তা পুলিশ খুঁজে বের করতে পারলে এবং বাজিতৈরি করাদের ধরতে পারলে অনেক উপকার হত। এখন কোনোটাই পারছে না পুলিশ— শব্দবাজির উৎসএবং শহরের কোথা দিয়ে তা ঢুকছে। সুতরাং এই তাণ্ডব বন্ধ করা একেবারেই অসম্ভব। এমনকালো দিন আসেনি শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণের ইতিহাসে।

Advertisement

এদিকে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোদ রাজধানীর বুকে নিষিদ্ধ বাজি নির্বিচারে ফাটানো হল। দীপাবলির রাতেনিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর ধোঁয়া দিল্লির আকাশ-বাতাস ভরিয়ে দিল।

Advertisement

শব্দবাজির বিকটশব্দে ঘুম ভেঙে জেগে উঠল শিশুরা এবং বয়সের ভারে ক্লান্ত অবসন্ন নাগরিকরা। দিল্লিবাসী দেকলেন শব্দবাজি ফাটানোর কারণে যে পরিমাণ দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে তাতে ভারতের রাজধানী দিল্লি সবার শীর্ষে। বাতাসের মান নিয়ে সুইৎজারল্যান্ডের একটি সংস্থা সমীক্ষা চালিয়েছিল। তাতে দেখা গেল রাজধানী দিল্লির দূষণ ভয়াবহ— এই দূষণে মানুষ বাস করলে তারা নানা কঠিন রোগে আক্রান্ত হবেন।

সমীক্ষার ফল দেখাল দূষণের মাত্রার নিরিখে দিল্লি শীর্ষে। এই সংস্থা দশটি দেশের  তালিকা প্রকাশ করেছে। মুম্বইয়ের স্থান পাঁচে। আর আটে তিলোত্তমা কলকাতা। লাহোর রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। কুয়েত সিটি তিনে আর করাচি চারে। দিল্লির দূষণ রুখতে আপ সরকার বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু সেগুলি কার্যকরী করতে ব্যর্থ বর্তমান বিজেপি সরকার। সুতরাং দিল্লি শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশের নাকের ডগায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফেটেছে দেদার। কলকাতার স্থান আটে থাকায় পুলিশ এবং প্রশাসন হয়তো কিছুটা খুশি হবেন। কিন্তু এটা ভুললে চলবে না কলকাতায় দূষণের মাত্রা সারা বছরই ভয়ঙ্কর। দীপাবলির দিনগুলিতে তা আরও ভয়াবহ রূপে বেড়ে যায়।

পরিবেশবিদরা এবং চিকিৎসকরা বলেন, দীপাবলিতে শহরে দূষণের মাত্রা যেভাবে বেড়ে গেল তার জন্য ভুগতে হবে শহরবাসীকে, বিশেষ করে শিশুদের। তারা শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত নানা রোগের শিকার হবে। বছরের প্রতিটি দিনই খারাপ হয়ে যাওয়া গাড়ির কালো ধোঁয়ায় বাতাস বিষাক্ত হয়। সুতরাং মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তাদের ভোগান্তি বাড়ে, অনেকেই জটিল রোগে আক্রান্ত হয়।

Advertisement