সঙ্গীতজগতের নক্ষত্র জুবিন গর্গের প্রয়াণে এখনও শোকস্তব্ধ অসম। গায়কের অকাল প্রয়াণে গোটা রাজ্য জুড়ে মন খারাপের সুর। রাষ্ট্রীয় শোক পালন হয়েছিল তাঁর মৃত্যুর পর। এরপর কেটে গিয়েছে প্রায় ২৮ দিন, তবু এখনও যেন স্বাভাবিক হতে পারছে না অসম। বাঁধভাঙা মন খারাপ যেন কিছুতেই সারতে চাইছে না। এবার দশম ‘ব্রহ্মপুত্র ভ্যালি চলচ্চিত্র উৎসব’ স্থগিত রাখা হল ভূমিপুত্রের মৃত্যুশোকে। চলতি বছর ডিসেম্বরের ৪ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত এই চলচ্চিত্র উৎসব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবছর তা বন্ধ রাখা হল জুবিনের মৃত্যু শোকে। নানা রঙে সাজানো হয়েছিল অনুষ্ঠান। কিন্তু এই মুহূর্তে সেসব আনন্দই যেন মাটি গায়ককে ছাড়া।
জুবিনের হঠাৎ মৃত্যুর খবরে তবে শুধু অসম নয়, সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের নানা প্রান্তে শিল্পীর ভক্তরা শোকে ভেঙে পড়েছিলেন। গুয়াহাটি থেকে জোরহাট সর্বত্রই ভক্তরা গান শুনে, ছবি সাজিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রিয় শিল্পীকে স্মরণ করেছিলেন। এক মাস কেটে গেলেও তাঁকে হারানোর বেদনা এখনও সর্বত্র। অসমের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের এক অমলিন প্রতীক এই গায়ক। তাঁর কথাই যেন সত্যি হল। রক্তমাংসের জুবিন বলেছিলেন তাঁর মৃত্যু হলে ৭ দিন স্তব্ধ হয়ে যাবে অসম। হলও তাই।
Advertisement
গায়কের মৃত্যুতে আয়োজকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, এবারের চলচ্চিত্র উৎসবটি করা হবে ২০২৬ সালে। মাত্র তিন বছর বয়সে গান গাওয়া শুরু করেন জুবিন। মা-ই ছিলেন তাঁর প্রথম গুরু। পণ্ডিত রবিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ১১ বছর তবলা শেখেন জুবিন। পরে গুরু রমানি রাইয়ের কাছে অসমীয়া লোকসঙ্গীতের তালিম নেন। ৪০টিরও বেশি ভাষা-উপভাষায় ৩৮,০০০ এরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন জুবিন। অসমিয়া, বাংলা এবং বলিউড সিনেমায় গান গেয়ে খ্যাতি লাভ করেন।
Advertisement
প্রসঙ্গত, গুয়াহাটির একটি কোম্পানি সিঙ্গাপুরে নর্থ ইস্ট ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছিল। সেই শুক্রবার রাতে পারফর্ম করার কথা ছিল জুবিন গর্গের। কিন্তু তার আগেই শেষ হয়ে গেল সব। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠানের আগে স্কুবা ড্রাইভিং করার সময় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা শুরু হয় গায়কের। আইসিইউতে ভর্তি করা হলে দুপুর আড়াইটে নাগাদ মৃত বলে ঘোষণা করা হয় শিল্পীকে। এর আগে চলতি বছর মে মাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন জুবিন। সেই সময় জ্বর ও সর্দিতে ভুগছিলেন তিনি। তখন তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছিল।
Advertisement



