• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

ভারতে তৈরি কাশির সিরাপ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা জারি

ভারতের তিনটি কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিষাক্ত রাসায়নিক ডায়াথিলিন গ্লাইকোল এই কাশির সিরাপগুলোতে মিলেছে

ভারতের তিনটি কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিষাক্ত রাসায়নিক ডায়াথিলিন গ্লাইকোল এই কাশির সিরাপগুলোতে মিলেছে। এই সিরাপগুলো মূলত ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কোল্ডরিফ, রেসপিফ্রেশ টিআর ও রিলাইফ এই ৩টি কাশির সিরাপ প্রস্তুতকারী সংস্থা শ্রীসান ফার্মাসিউটিক্যালস, রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস এবং শেপ ফার্মার বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কবার্তা জারি করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এসব সিরাপে ডায়াথিলিন গ্লাইকোলের মাত্রা অনুমোদিত সীমার ৫০০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। সাধারণত অল্প পরিমাণে এই রাসায়নিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহৃত হলে তা মারাত্মক বিষে পরিণত হয়ে শিশুদের কিডনি বিকল, স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি এবং মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

Advertisement

ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন জানিয়েছে, তারা ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং দেশের ওষুধ উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া আরও কঠোর করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। সিডিএসসিও হু-কে জানিয়েছে গত সপ্তাহে এই সিরাপ খাওয়ার কারণে ১৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যাদের বয়স পাঁচ বছরের কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আশ্বস্ত করে জানানো হয়েছে, বিপজ্জনক এই সিরাপগুলি ভারত থেকে কোথাও রপ্তানি করা হয়নি। অবৈধভাবে রপ্তানিরও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

Advertisement

সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা ডব্লিউএইচও’র তথ্য পেয়েছি এবং ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উৎপাদন পর্যায়ে মান যাচাই আরও জোরদার করা হবে। একইসঙ্গে অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন, শিশুদের কাশির ওষুধ ব্যবহারের আগে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও অনুমোদন সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতে এবং সন্দেহজনক ওষুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে।

উল্লেখ্য, কাশির সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’ খেয়ে মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে ২০ জনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সামান্য জ্বর থেকেই আচমকা কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হয় শিশুদের। সাম্প্রতিক একটি পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, সিরাপটিতে ৪৮.৬ শতাংশ ডাইথিলিন গ্লাইকল রয়েছে। কেন্দ্রের অধীনস্থ দ্য ডিরেক্টরেট জেনালের অফ হেলথ সার্ভিস স্পষ্ট জানিয়েছে, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে যথাযথভাবে সমস্ত ওষুধের পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

অন্যদিকে, সিরাপ ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে একটি জনস্বার্থ মামলা। আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি এই মামলাটি দায়ের করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে গোটা ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানান তিনি। ২০২৩ সালে ভারতীয় এক কোম্পানির সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তান, গাম্বিয়া ও ক্যামেরুনে ১৪১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।

Advertisement