• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

উত্তরপ্রদেশের একটি গ্রামে রাবণ পুজিত হন, পোড়ানো হয় না কুশপুতুল, চলে শোকপালন

দশেরার দিন বিসরাখ গ্রামের বাসিন্দারা রান্নার উৎসব করেন। এ দিন অস্ত্র পূজার পাশাপাশি ক্ষীর এবং লুচির মতো খাবার তৈরি করা হয়। রাবণের মৃত্যুর জন্য শোকপালন করা হয়

২ অক্টোবর লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্ম শতবার্ষিকী এবং মহাত্মা গান্ধীর জন্মজয়ন্তীর পাশাপাশি দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে দশেরা উৎসব। আজ, বৃহস্পতিবার,  অশুভ শক্তির বিনাশের প্রতীক হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে রাবণের মূর্তি। তবে অন্য চিত্র ধরা পড়ল উত্তরপ্রদেশের নয়ডার বিসরাখ গ্রামে। এই গ্রামে রাবণকে পোড়ানো হয় না। এই গ্রামের বাসিন্দারা রাবণকে পুজো করেন। কারণ, মানুষের বিশ্বাস এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাবণ।

স্থানীয়দের বিশ্বাস অনুসারে, বিসরাখ গ্রামের নাম রাবণের বাবা ঋষি বিশ্বশ্রবার নাম থেকে এসেছে।  রাবণকে তাই ‘বিসরাখ গ্রামের পুত্র’ বলে মনে করেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁরা মনে করেন রাবণ শিবের উপাসক এবং জ্ঞানের প্রতীক।

Advertisement

গ্রামে আছে রাবণের মন্দিরও। ওই মন্দিরের পুরোহিত রামদাস মহারাজ বলেন, ‘এই গ্রামে শুধু রাবণ নন, তাঁর ভাই কুম্ভকর্ণ, বিভীষণ এবং বোন সুর্পনখাও জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা সবাই ঋষি বিশ্বশ্রবার পুত্র, যিনি ছিলেন ঋষি পুলস্ত্যর সন্তান।’ পুরোহিত রামদাসের মতে, রাবণ জন্মেছিলেন একটি মাথা নিয়েই। তবে গ্রামের মন্দিরে শিবের সামনে তিনি তাঁর মাথা দশ বার কেটে ছিলেন। তাই শিবের বরে তিনি দশটা মাথা পান। সেই কারণেই তাঁর নাম হয় দশানন।

Advertisement

স্থানীয়দের মতে, এই গ্রামেই ছিল ঋষি পুলস্ত্যর আশ্রম। আর এই গ্রামের সঙ্গে শুধু মাত্র বিশ্বশ্রবা নন, যুক্ত আছে ভগবান ব্রহ্মার নামও। অন্য জায়গার মতো বিসরাখ গ্রামের বাসিন্দারা রাবণের মূর্তি পোড়ানোর অনুষ্ঠানে যোগ দেন না। ওই মন্দিরের মহান্ত রামদাস মহারাজ বলেন, ‘ দশেরার দিন বিসরাখ গ্রামের বাসিন্দারা রান্নার উৎসব করেন। আমরা এ দিন অস্ত্র পূজার পাশাপাশি ক্ষীর এবং লুচির মতো খাবার তৈরি করি। রাবণের মৃত্যুর জন্য আমরা শোকপালন করি। তাঁর মূর্তি বা কুশপুতুল পোড়াই না।’

গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, এই গ্রামের কেউ রামলীলায় অংশ নিলে ফল খারাপ হয়। এর আগে একজন রামলীলায় অংশ নেওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর একজন রাবণের কুশপুতুলে আগুন দেওয়ার পরেই মানসিক ভারসাম্য হারান। তারপর থেকেই কেউ আর রামলীলায় অংশ নেওয়া বা রাবণের মূর্তি পোড়ানোর কথা ভাবেন না।

Advertisement