বছরের শেষে দীপাবলির পরই রাজধানী দিল্লিতে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা এসআইআর। ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের এই সর্বভারতীয় উদ্যোগের লক্ষ্য, একদিকে নতুন ভোটারদের নাম যুক্ত করা, অন্যদিকে অযোগ্য বা মৃত ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। রাজধানীর জনঘনত্ব, অভিবাসন ও ভোটার তালিকায় বারবার অনিয়ম ধরা পড়ায় এই অভিযানকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য নির্বাচন দপ্তর।
দিল্লির মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আর. অ্যালিস ভাজ জানিয়েছেন, এসআইআর সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) নিয়োগ করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন আধিকারিক, নিবন্ধন আধিকারিক ও সহকারী আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
Advertisement
২০০২ সালের ভোটার তালিকা বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে এবার। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, পুরনো ওই তালিকাকে ভিত্তি করে মিলিয়ে দেখা হবে বর্তমান ভোটারের নামের সঙ্গে, যাতে যাচাই প্রক্রিয়া সহজ হয়। সেই তালিকা রাজ্য নির্বাচনী দপ্তরের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে আপলোড করা হয়েছে। যাঁদের নাম ২০০২ এবং বর্তমান তালিকা উভয় জায়গাতেই রয়েছে, তাঁদের শুধু গণনা ফর্ম জমা দিলেই হবে। যদি ভোটারের নাম না থেকে তাঁর বাবা বা মায়ের নাম ২০০২ সালের তালিকায় থাকে, তবে পরিচয়পত্রসহ তাঁদের পিতা-মাতার নাম সম্বলিত পুরনো তালিকার কপি জমা দিতে হবে।
Advertisement
এসআইআর-এর সময় বিএলও সরাসরি ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ফর্ম পূরণ করাবেন। অধিকাংশ আধিকারিক মনে করছেন, দিল্লির জনসংখ্যার চাপ ও ক্রমাগত অভিবাসনই ভোটার তালিকায় বিভ্রান্তির মূল কারণ। অনেক নতুন বাসিন্দা এখনও নাম তুলতে পারেননি। আবার অনেক মৃত ভোটারের নাম এখনও তালিকায় রয়ে গিয়েছে। বিশেষ নিবিড় সংশোধন সেই ফাঁক পূরণ করবে।
এদিকে সূত্রের খবর, দিল্লির বিজেপি সরকারের উদ্যোগে আলাদা সিএএ ক্যাম্পও খোলা হয়েছে। যাঁদের নাম এখনও ভোটার তালিকায় ওঠেনি অথচ তাঁরা দিল্লিতে বসবাস করছেন, তাঁদের সিএএ-এর আওতায় এনে ভোটার হিসেবে নথিভুক্ত করার কাজ চলছে। রাজনৈতিক মহলে এরই মধ্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে শাসক দল সিএএ-কে ভোটব্যাঙ্ক তৈরির হাতিয়ার বানাতে চাইছে।
তবে রাজনৈতিক বিতর্ক যাই হোক, দীপাবলির পর শুরু হতে যাওয়া এই এসআইআর দিল্লির নির্বাচনী প্রস্তুতিকে নতুন দিশা দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Advertisement



