কাতারের রাজধানী দোহায় ইজরায়েলি বিমান হানার তীব্র নিন্দা করে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কাতারের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন জানানো হয়। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ওই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও।
গত মঙ্গলবার দোহায় একটি আবাসিক ভবনে বোমাবর্ষণ করে ইজরায়েলি বিমানবাহিনী। তেল আভিভের দাবি, ওই বাড়িতে হামাসের কয়েকজন শীর্ষ নেতা অবস্থান করছিলেন। যদিও কাতার সরকারের মতে, হামলায় ছ’জন নিহত হন, যাঁদের মধ্যে একজন কাতারের নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তবে হামাসের কোনও শীর্ষ নেতা নিহত হননি বলে জানায় কাতার পুলিশ।
Advertisement
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির অন্যতম কেন্দ্র কাতার। দোহার অদূরে অবস্থিত সেন্টকম ঘাঁটিতে বর্তমানে প্রায় ৮,০০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। কাতার উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি)-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও বটে। এই প্রেক্ষাপটে আমেরিকার পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে কাতারকে সমর্থন করাটা কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
Advertisement
তবে একই দিনে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার পরিষদে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে পাকিস্তান উত্থাপিত প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি। ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদতের অভিযোগ তুলে তা নস্যাৎ করেন মানবাধিকার কাউন্সিলের আইনজীবীরা।
অন্যদিকে, শুক্রবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় প্যালেস্তাইনের পূর্ণ সদস্যপদের পক্ষে ভোট দিয়েছে ভারত। মোট ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪২টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। তবে ইজরায়েল ও আরও ৯টি দেশ এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয় এবং ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের নানা প্রস্তাব সত্ত্বেও ইজরায়েলি আগ্রাসন থামেনি বলেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কূটনৈতিক মহল। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ১৫৪টি প্রস্তাব গ্রহণ করলেও, প্যালেস্তাইনের পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
বিশেষ করে ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে গাজায় প্রায় ৬০ হাজার প্যালেস্তাইনি প্রাণ হারিয়েছেন। চরম খাদ্য সংকট, অপুষ্টি এবং চিকিৎসার অভাবে নারীরা, শিশুরা ও সাধারণ মানুষ মারাত্মক মানবিক সংকটে পড়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রসঙ্ঘে গৃহীত সাম্প্রতিক প্রস্তাবে গাজা অঞ্চলকে ‘হামাসমুক্ত’ করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। তবে বাস্তবে এই প্রস্তাব কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
Advertisement



