• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

আজ ডুরান্ড ফাইনালে নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে ডায়মন্ড

নর্থ-ইস্ট দলের সবচেয়ে বড় গুণ হল, খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয়। হঠাৎ হঠাৎ জায়গা বদল করে তারা আক্রমণে উঠে আসে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বাংলার ফুটবলের সম্মান ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন স্বপ্নের খোঁজে আজ ডুরান্ড কাপ ফাইনালে ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাব চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে উত্তর ভারতের নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। ডায়মন্ড হারবার যদি খেতাব তুলে নিতে পারে, তাহলে শুধু ডুরান্ড কাপে নয়, বাংলার ফুটবল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের রচনা হবে। মাত্র চার বছরের ডায়মন্ড হারবার যেভাবে আইএসএল ফুটবলে পাঁচটা দলের বিরুদ্ধে লড়াই করে ফাইনালে উঠে এসেছে, তা বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত গর্বের। ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে আরও একটি আইএসএল ফুটবলে খেলা নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড ক্লাবের বিরুদ্ধে। সেমি ফাইনাল ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয় তুলে নিয়েছে ডায়মন্ড হারবার। এমনকি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের চারজন বিদেশি খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় পাওয়াটা কম কৃতিত্বের নয়। একটা সময় গ্রুপ লিগে মোহনবাগানের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পরে অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, ডায়মন্ড হারবার এবারে ভালো জায়গায় পৌঁছতে পারবে না। কিন্তু ক্লাবের কর্ণধার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খেলোয়াড়দের কাছে বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, যে কোনও খেলায় হারজিত তো থাকবেই। তাই বলে মনমরা হয়ে বসে থাকলে হবে না। সবসময়ই সামনের দিকে তাকাতে হয়। যে কোনও কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করে জয় তুলে আনতে হয়। তাই বিশ্বাস করি, ক্লাবের ফুটবলাররা নতুন করে শপথ নিয়ে জেতার লক্ষ্যে বাজিমাৎ করবেই। হয়তো সাংসদ অভিষেকের এই বার্তায় ডায়মন্ড হারবারের ফুটবলাররা আরও বেশি অনুপ্রাণিত হয়ে প্রথমে জামশেদপুর এফসিকে হারিয়ে উঠে আসে শেষ চারের খেলায়। আবার সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের মতো ডাকসাইটের দলের বিরুদ্ধে মাঠে নামাটা কম চাপের নয়। সেই চাপকে উৎরে দিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে পরাস্ত করে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ডায়মন্ড হারবার।

ফাইনালে খেলতে নামার আগে কোচ কিবু ভিকুনা খেলোয়াড়দের নিয়ে বৃষ্টির মধ্যেও শুক্রবার অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন। খোলায়াড়দের তিনি বলেছেন, আমাদের কাছে একটাই শপথ চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। আর তোমরাই পারবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে। কোনওরকম ভয় নয়, সাহসের সঙ্গে ফুটবল রণক্ষেত্রে যুদ্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রতিপক্ষ দল যতই কঠিন হোক না কেন, তাদের পরাস্ত করে জয়ের হাসি হাসতে হবে। বিশেষ করে লুকা মাজসেনের উপরে নির্ভর করে মাঝমাঠ সক্রিয় ভূমিকা নেবে। এই দলে মিগুয়েল কার্তোজ ও জবি জাস্টিনের মতো ফুটবলাররা রয়েছেন। তাঁরাও কিন্তু প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে লড়াকু ভূমিকা নিয়ে মাঠে নামবে। ক্লাবের সচিব প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য বলেন, মন রাখতে হবে প্রতিপক্ষ নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড দল বেশ শক্তিশালী। তাদের বিরুদ্ধে কৌশলগতভাবে এবং অঙ্ক কষে খেলার প্রয়োজন রয়েছে। সচিব মানস আরও বলেন, নর্থ-ইস্ট দল গত বছর যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে ডুরান্ড ফাইনালে মোহনবাগানের মতো দলকে হারিয়েছিল। সেই কারণে তাদের শুধু সমীহ করা নয়, সতর্ক থাকতে হবে কোনওভাবেই যেন আক্রমণ গড়ে তুলতে না পারে। দলের খেলোয়াড়রা প্রত্যেকেই পুরোপুরি ফিট। তাঁরা ছটফট করছেন সেরা খেলা উপহার দেওয়ার জন্য। মানসিকভাবে তাঁরা তৈরি থাকবেন। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচে ডায়মন্ডের খেলার মধ্যে যে জ্যোতি দেখতে পাওয়া গিয়েছে, তা ধরে রাখতে পারলে ডুরান্ড ফাইনালে আমরা জয়ের পতাকা উড়িয়ে দেব।

Advertisement

নর্থ-ইস্ট দলের সবচেয়ে বড় গুণ হল, খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয়। হঠাৎ হঠাৎ জায়গা বদল করে তারা আক্রমণে উঠে আসে। গতির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে অনেক সময়। কোচ পেন্দ্রো বেনালির স্পষ্ট জানিয়েছেন, দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে খেতাব তুলে নিতে চাই। অধিনায়ক মিচেল জাবাকো আত্মবিশ্বাসী হলেও কোনও সময়ের জন্য প্রতিপক্ষ ডায়মন্ড হারবারকে হালকা চালে দেখতে রাজি নন। তিনি মনে করেন, ফাইনাল খেলার সঙ্গে অন্য কোনও খেলার তুলনা করা যায় না। যারা ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছে, তাদের অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে। নর্থ-ইস্ট দলের মালিক হলেন অভিনেতা জন আব্রাহাম। গতবছর তিনি মাঠে উপস্থিত ছিলেন। তবে এবারে আসবেন কিনা, তা স্পষ্ট জানা যায়নি। খেলোয়াড়রা মনে করেন, তিনি হলেন আমাদের আশা, আমাদের শক্তি। তারাও ভালো করে জানে ডায়মন্ড হারবার একেবারে আনকোরা দল। তাই তরুণ ব্রিগেড লড়াই করতে জানে। তাদের কাছে ভয় শব্দটা কখনওই দানা বাঁধে না। সেই কারণেই নর্থ-ইস্ট দলকেও বেশ সতর্ক থাকতে হবে।

Advertisement

Advertisement