দীর্ঘ চার বছরের সামরিক শাসনের পর ফের ভোটের আয়োজনে এগোচ্ছে মায়ানমার। চলতি বছরের শেষ দিকে সেখানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে এই ভোটে অংশ নিতে পারবে না আউং সান সু চি-র দল এনএলডি। সেনা সরকারের নিয়মকানুন এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে কোনও রাজনৈতিক শক্তিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়। ফলে আগামী বছরের মধ্যে দেশটিতে রাজনৈতিক পালাবদল যে অনিবার্য হয়ে পড়েছে, বিশেষজ্ঞ মহলে সে বিষয় নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটির নানা প্রান্তে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে উত্তর মায়ানমারের গোষ্ঠীগুলি ক্রমশ শক্তি অর্জন করছে। তাদের পেছনে চিনের প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে বলে কূটনৈতিক মহলের দাবি। বেজিং বহু দিন ধরেই ‘চিন-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডর’ প্রকল্পকে সামনে রেখে দেশটিতে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। ওই করিডর বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ-পূর্ব চিন থেকে সরাসরি ভারত মহাসাগরে পৌঁছনোর পথ খুলবে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে বহুদিন ধরেই কাজ থমকে রয়েছে। এখন ভোটের আগে আবারও সক্রিয় হয়েছে চিন। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করছে তারা।
Advertisement
এদিকে ভারতের কূটনৈতিক মহলেও মায়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটিতে চিন যদি স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়, তবে তার আঁচ সরাসরি পড়বে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে। পাকিস্তানের সঙ্গে বেজিংয়ের ঘনিষ্ঠতা আগে থেকেই দিল্লির মাথাব্যথার কারণ দাঁড়িয়েছে। তার সঙ্গে চিন যদি পূর্ব সীমান্তেও প্রভাব বাড়ায়, তবে কৌশলগত চাপ বহুগুণে বাড়বে।
Advertisement
এই অবস্থায় ভারতের করণীয় নিয়েও চলছে আলোচনা। কেউ কেউ মনে করছেন, আরাকান আর্মির মতো বিদ্রোহী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করলে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক অবস্থান মজবুত হতে পারে। উত্তর-পূর্বের কিছু রাজনৈতিক প্রতিনিধি ইতিমধ্যেই সেই দিকেই এগিয়েছেন। তবে মূল উদ্যোগ নেওয়া না হলে কেন্দ্রীয় স্তরে ভারত অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Advertisement



