পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দায়িত্বশীল দেশ হিসেবে পাকিস্তান যে ভূমিকা পালন করে এসেছে, সেটা বজায় রেখেই যে কোনও নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং ভরসাযোগ্য তদন্ত প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে তৈরি আছে ইসলামাবাদ।’ এরই মধ্যে সেই দেশের সেনাপ্রধান আসিম মুনির ফের বলেছেন পাকিস্তান আত্মরক্ষা করতে জানে। শুধু তাই নয়, পাক সেনাপ্রধানের মুখে আবার উঠে এসেছে দ্বিজাতি তত্ত্বের কথাও।
শনিবার পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্যারেডে যোগ দিতে গিয়ে দ্বিজাতি তত্ত্বের কথা ফের তুলে ধরেন আসিম মুনির। তিনি বলেছেন, হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পাকিস্তানের অস্তিত্ব এবং পরিচয় এই তত্ত্বের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেও পাক সেনাপ্রধান দ্বি-জাতি তত্ত্বের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষেরা মনে করতেন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম, রীতিনীতি, ঐতিহ্য ও চিন্তাভাবনা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা পৃথক। এটিই ছিল দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তি।’
Advertisement
ওইদিনই কাশ্মীর নিয়েও মন্তব্য করেন মুনির। তিনি বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান ইতিমধ্যে কাশ্মীরের জন্য তিনটি যুদ্ধ করেছে এবং যদি আরও ১০টি যুদ্ধের প্রয়োজন হয় তবে পাকিস্তান সেই লড়াই করবে। পাকিস্তান ভারতের সামরিক শক্তি বা তার প্রযুক্তিকে ভয় পাবে না। কাশ্মীর আমাদের জীবন। কোনও সন্দেহ নেই- কাশ্মীর একদিন স্বাধীন হবে এবং পাকিস্তানের অংশ হবে। পাকিস্তানই কাশ্মীরের জনগণের ভাগ্য।’ তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর হল ইসলামাবাদের গলার শিরা। তাই পাকিস্তানিরা কখনও তাকে ভুলতে পারবে না।’
Advertisement
জেনারেল মুনির বলেছিলেন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কারণে পাকিস্তান বিনিয়োগ পাবে না। তাঁর কথায়, ‘আপনার কি মনে হয় সন্ত্রাসবাদীরা দেশের ভাগ্য কেড়ে নিতে পারবে ? ১.৩ মিলিয়নের শক্তিশালী ভারতীয় সেনাবাহিনী আমাদের ভয় দেখাতে পারে না, আপনার মনে হয় এই সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে পরাজিত করতে পারবে?’
আসিম মুনিরের মন্তব্যের কয়েক দিনের মধ্যেই জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে। তাই মুনিরের ওই মন্তব্যকে হিংসায় উস্কানি হিসাবেই দেখছেন ভারতের গোয়েন্দারা।উল্লেখ্য যে, ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজনের সময় মহম্মদ আলি জিন্না দ্বিজাতি তত্ত্বের কথা তুলে ধরেছিলেন।
এদিন পাক সেনাপ্রধান ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের সংবাদমাধ্যম পাকিস্তানের জন্মের ইতিহাসকে মুছে দিতে বা পাল্টে দিতে পারবে না’। দেশকে রক্ষা করতে পাকিস্তানের সব নাগরিক একজোট বলে ঐক্যের বার্তাও দেন তিনি।
মুনির হুঁশিয়ারির সুরে এদিন জানান, বাইরে থেকে যতই হুমকি দেওয়া হোক, পাকিস্তান নিজেকে রক্ষা করতে জানে। প্রসঙ্গত, পাক সেনাপ্রধানের আগে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও প্রায় একই সুরে বলেছিলেন, আমরা যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।’
Advertisement



