• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সমস্ত দপ্তরকে অভিন্ন ইউপিএমএস পোর্টালে জুড়ে দিল নবান্ন

লক্ষ্য সব প্রকল্পে গতি ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি

নবান্ন। ফাইল চিত্র

সমস্ত সরকারি প্রকল্পের কাজে স্বচ্ছতা ও গতি আনতে জোর দিচ্ছে নবান্ন। সেজন্য সব দপ্তরকে একটি ‘ইউনিফায়েড প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (ইউপিএমএস) -এ জুড়ে দিচ্ছে নবান্ন। যাতে প্রকল্প সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য-পরিসংখ্যান দাখিল করা সহজ হয়। এবিষয়ে গত সোমবারেই রাজ্যের অর্থ দপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেখানে জানানো হয়েছে, এবার থেকে সমস্ত দপ্তরের যাবতীয় তথ্য ইউপিএমএস পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। ১ এপ্রিল মঙ্গলবার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের শুরু। এইদিন থেকে তা কার্যকর হতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গতিশীলতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যদিও নবান্ন সূত্রের খবর খবর, বছর ঘুরলেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই কাজের স্বচ্ছতা ও গতি আনার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া বলে প্রশাসন ও শাসকদলের অনেকেই মনে করেন।

Advertisement

অনেকে আবার মনে করেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে গ্রামেই তৃণমূলের ফল সবচেয়ে ভাল হয়েছিল। বরং শাসকদলকে শহর ও মফস্‌সলের অনেক জায়গাতেই ধাক্কা খেতে হয়েছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে গ্রামীণ উন্নয়নে গতি বাড়াতে চাইছে রাজ্য সরকার। অন্য একটি অংশের মতে, গ্রামোন্নয়ন দপ্তর ছাড়া রাজ্য সরকারের সমস্ত দপ্তরই গ্রাম ও শহরে কাজ করে থাকে। ফলে এটা সার্বিক ভাবে গোটা রাজ্যেই সরকারি প্রকল্পকে গতিশীল করার প্রয়াস। তবে যে যাই বলুক না কেন রাজ্য সরকার যে গ্রামীণ মানুষের উন্নয়নে জোর দিয়েছে, তা রাজ্য বাজেটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এবার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে। রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের অনেকের বক্তব্য, গ্রামীণ বাংলায় সরকারের কাজ যাতে দ্রুত হয় এবং কাজে যাতে স্বচ্ছতা আসে, অর্থাৎ সরকার সম্পর্কে মানুষের কাছে যাতে ইতিবাচক বার্তা যায় সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে রাজ্য।

Advertisement

এদিকে শাসকদলের অনেকের অভিমত, আমলাদের কাজে ‘শ্লথতার’ জন্য সরকারি কাজে ‘ফলো আপ’ প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে হচ্ছে না। ফলে মানুষ সময়মতো পরিষেবা পাওয়ার বদলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাঁদের মূল্যবান সময়েরও অপচয় হচ্ছে। ভোটের সময় যার মাশুল গুনতে হচ্ছে তৃণমূলকে। কারণ রাজ্যের শাসকদলের উপর রাজনৈতিকভাবে ‘নেতিবাচক প্রভাব’ পড়ছে। কিন্তু আমলাদের কাজের জবাবদিহি করতে হচ্ছে দলকে। বিশেষ করে দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের। সেই বিষয়টির ওপর এবার গুরুত্ব বাড়াতে চলেছে নবান্ন। সেজন্য রাজ্য সরকার সব দপ্তরের প্রকল্পের খতিয়ান এবার ইউপিএমএস পোর্টালে নথিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রসঙ্গত এতদিন পর্যন্ত পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সেচ, জলসম্পদ, কেএমডিএ এবং পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দপ্তরের অধীন যে সমস্ত প্রকল্প ছিল, কেবল সেগুলির তথ্যই এই পোর্টালে দেওয়া হত। এবার রাজ্য সরকারের সমস্ত বিভাগ এই পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ সমস্ত প্রকল্পের প্রতি দিনের খতিয়ান পোর্টালে তুলে ধরতে হবে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের নৈতিক সিদ্ধান্ত, অতি দ্রুততার সঙ্গে সমস্ত প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য সরকারি আধিকারিকদের জন্য একটি বিশেষ অ্যাপ চালু করা হয়েছে। যাতে শুধু ঘরে বসে নয়, যেকোনও মুহূর্তে সরকারি আধিকারিকরা রিপোর্ট জমা দিতে পারেন।

Advertisement