• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী পদে নিয়োগের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ীভাবে নিয়ােগের ব্যবস্থার কার্যকর করার ঐতিহাসিক নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

প্রতিকি ছবি (File Photo: Twitter/@adgpi)

ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ীভাবে নিয়ােগের ব্যবস্থার কার্যকর করার ঐতিহাসিক নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সােমবার দেশের শীর্ষ আদালত এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে একমাত্র কমব্যাট উইং ছাড়া সেনাবহিনীর সর্বস্তরে আগামী তিন মাসের মধ্যে এই নিয়ম চালু করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট আগের প্রচলিত নিয়ােগ পদ্ধতির সমালােচনা করে বলেছে সেনাবাহিনীতে নিয়ােগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের দেওয়া যুক্তি শুধু লিঙ্গ বৈষম্যমূলক নয়, পুরনাে ধারণাপ্রসূত এবং বিরক্তিকর। এই নিয়ম চালু হলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে মহিলারা যাতে পুরুষদের সমান সুযােগ সুবিধা পান সেটিও সুনিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। 

সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্রের সমালােচনা করে বলা হয়, দিল্লি হাইকোর্ট ২০১০ সালে মহিলা সেনা অফিসারদের জন্য স্থায়ী কমিশন গঠনের মঞ্জুরি দিলেও কেন্দ্র তা পালন করেনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৯২ সাল থেকেই ভারতীয় বাহিনীতে মহিলাদের শুধু চিকিৎসা পরিষেবায় দেখা যেতাে। এর বাইরে তাদের কোনও কাজ ছিল না। তাছাড়া স্থায়ী কমিশন অফিসার পদে কুড়ি বছরও কাজ করার সুযোগও মহিলারা পান না। তাদের কাজ করার সুযােগ ছিল মাত্র ১৪ বছর এবং তারা পদোন্নতি বা পেনশনের সুযােগ পেতেন না। 

Advertisement

এই নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলা হয়। দিল্লি হাইকোর্ট ৫৭ জন মহিলাকে সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করার অধিকার দেয়। হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানায় কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১০ সাল থেকে সেই মামলা বিচারাধীন ছিল। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে ভৎর্সনা করে বলে এই রায়ের উপর শীর্ষ আদালত তাে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। তাহলে কেন হাইকোর্টের নির্দেশ আগে কার্যকর করল না সরকার। 

Advertisement

এদিন কেন্দ্রীয় সরকার জানায় সেনাবাহিনীর জওয়ানদের একটা বড় অংশ গ্রাম থেকে আসেন। ফলে মহিলাদের নির্দেশ মানার মতাে কেন্দ্রীয় মানসিকতা তাদের থাকে না। এমনকী দেহ গঠন সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতার কারণেও মেয়েরা যুদ্ধ করার উপযুক্ত নয় বলেও আদালতে জানায়। কেন্দ্রের উত্তরে সুপ্রিম কোর্ট জানায় পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কাজ করেন মহিলারা। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি মান্ধাতার আমলের এবং সেই কারণে লিঙ্গ বৈষম্যমূলকও বটে। মনে রাখতে হবে মহিলা সেনা অফিসারেরা সমানভাবে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছেন। 

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি বলেছিলেন, সেনাবাহিনীতে স্থায়ী কমিশনড পদে নিয়ােগ করা হবে। তবে তিনি এটা খােলসা করে বলেননি যে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সমস্ত শাখায় এই নিয়ম প্রযােজ্য হবে কিনা। আজকের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে সেনাবাহিনীতে এবার স্থায়ী কমিশনড পদে দেখা যাবে ভারতীয় মহিলাদেরও।

Advertisement