• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

বাবলুর গাড়িকে পাল্টা ধাওয়া করে সুতন্দ্রার গাড়ি, স্বীকারোক্তি চালকের

ভয় পেয়ে পালিয়ে যান, দাবি বাবলুর

ফাইল চিত্র

রবিবার পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত বাবলু যাদব। তাঁর বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার তাঁকে কাঁকসা থানার পুলিশ গ্রেপ্তারের ১৬ ঘন্টা পর জেরায় প্রথমবার মুখ খুললেন। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্যের জট কাটাতে মুখ খুলেছেন সুতন্দ্রার গাড়ির চালকও। ফলে তদন্ত নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, প্রথমে বাবলু যাদবের গাড়ি সুতন্দ্রার গাড়িতে ধাক্কা দেয়। এর পরে সুতন্দ্রার গাড়ি পাল্টা অভিযুক্ত বাবলুর গাড়িকে ধাওয়া করে। দ্রুত বেগে তাঁদের গাড়ি অনুসরণ করে লোকাল রোডে যেতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধরে একটি বাথরুমে ধাক্কা মারে। যার জেরে মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার।

শুক্রবার দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয় ধৃত বাবলু যাদবকে। সে সময় তিনি আদালতে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি ঘটনার দিন রাতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন? জবাবে বাবলু যাদব বলেন, তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, তাই পালিয়ে যান। সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি ইভটিজিংয়ের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

Advertisement

প্রসঙ্গত রবিবার রাতে চন্দননগরের বাসিন্দা সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায় পানাগড়ে জাতীয় সড়ক ধরে গাড়ি করে ফিরছিলেন। সে সময় অন্য একটি সাদা রঙের ‘ক্রেটা’ গাড়িতে থাকা কয়েকজন মত্ত যুবক তাঁর গাড়ির পিছু ধাওয়া করে বলে অভিযোগ। সুতন্দ্রার সহকর্মীরা অভিযোগ করেন, কয়েক জন মত্ত যুবক একটি সাদা গাড়িতে করে এসে সুতন্দ্রাদের নীল গাড়িটিকে বার বার ধাক্কা দেন। তার ফলেই উল্টে যায় সুতন্দ্রাদের গাড়ি। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তরুণীর। তবে এই অভিযোগ যে পুরোপুরি সত্য নয়, তা প্রমাণ হয়ে গেল সুতন্দ্রার গাড়ির চালকের বয়ানে। কার্যত তিনি পুলিশের দাবিই স্বীকার করে নিয়েছেন। গাড়ির চালক রাজদেও শর্মা বলেছেন, বাবলু যাদবের গাড়ি ধাক্কা দেওয়ার পর সুতন্দ্রার কথাতেই সাদা গাড়িকে দ্রুত বেগে ধাওয়া করেন! গাড়ির গতিবেগ বাড়াতে বাড়াতে ১০০ কিমিতে পৌঁছে যায়। এই গতিবেগ এতটাই বেশি ছিল যে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।

Advertisement

সুতন্দ্রার গাড়িচালক প্রকাশ্যে বলেন, ‘ওই সাদা গাড়িটা আমাদের গাড়িতে প্রথমে ধাক্কা দিয়েছিল। তখন ম্যাডামই বলেছিল ওই গাড়িটার পিছনে ধাওয়া করতে। সাদা গাড়িটাকে দাঁড় করাতেও বলেছিল ম্যাডাম। আমি সেই চেষ্টাই করছিলাম। এগিয়েও গিয়েছিলাম। কিন্তু ওদের গাড়িটা দাঁড় করাতে পারিনি। এরপর জাতীয় সড়ক ছেড়ে লোকাল রোডে নেমে যায় ওদের গাড়িটা। ম্যাডামের কথায় আমি লোকাল রোডে গাড়ি নামাই। গাড়ির গতিবেগ প্রায় ১০০ ছিল। আমি সামলেই নিতাম। কিন্তু ওই টয়লেটটায় ধাক্কা লেগে আমাদের গাড়িটা উল্টে গিয়েছিল।’

উল্লেখ্য, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে পুলিশ দাবি করে, রেষারেষির কারণেই পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ সুতন্দ্রাদের গাড়িটিতে বার বার ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দেয়। পুলিশের দাবি ছিল, তরুণীর গাড়িই যুবকদের সাদা গাড়িটিকে ধাওয়া ঘটনার দিন রাতে। কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজেও সুতন্দ্রার গাড়িটিকে যুবকদের গাড়ির পিছনে পিছনে যেতে দেখা গিয়েছে। সেই সময় সুতন্দ্রার গাড়ির গতিও বেশি ছিল।

Advertisement