• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সল্টলেক মিউজিক ফেস্টিভাল

আটত্রিশতম বর্ষের সল্টলেক মিউজিক ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হলো জানুয়ারির ১১ ও ১২ তারিখ, সল্টলেকের ভারতীয় বিদ্যাভবন স্কুলের অডিটরিয়ামে।

আটত্রিশতম বর্ষের সল্টলেক মিউজিক ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হলো জানুয়ারির ১১ ও ১২ তারিখ, সল্টলেকের ভারতীয় বিদ্যাভবন স্কুলের অডিটরিয়ামে। সল্টলেক কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এবছরের অনুষ্ঠানটি প্রবাদপ্রতিম তবলিয়া পন্ডিত শঙ্খ চট্টোপাধ্যায় ও জগদ্বিখ্যাত তবলা সম্রাট ওস্তাদ জাকির হোসেনের স্মরণে উৎসর্গকরা হয়েছিল। প্রারম্ভিক প্রদীপ প্রজ্বালন, সম্মাননা, বক্তব্য প্রভৃতির পর ছিল পুরস্কার প্রদান পর্ব। এবছর সংস্থার তরফে যদুভট্ট পুরস্কার প্রদান করা হয় সন্তুর শিল্পী শুদ্ধশীল চ্যাটার্জী এবং কণ্ঠশিল্পী বিপ্লব মুখার্জিকে । সঙ্গীতরত্ন সম্মান লাভ করলেন গুরু উস্তাদ ইরফান মোহাম্মদ খাঁ (সরোদ শিল্পী) ও বর্ষীয়ান তবলা শিল্পী ও গুরু পন্ডিত সঞ্জয় মুখার্জি।

প্রথম সন্ধ্যার প্রথমেই ছিল কণ্ঠশিল্পী (পণ্ডিত শঙ্খ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা ও উত্তরসূরি) বিদূষী সংগীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়নপর্ব। শুরু করেন রাগ শ্যাম কল্যাণে; বিলম্বিত “স্মরণ করে প্রভু তেরা নাম” এবং দ্রুত “ধুম মাচি আজ ব্রীজ মে” (তাঁর নিজের রচনা)। পরে শোনালেন ঠুংরি (পক্ষান্তরে এটিকে দাদরা বলা হয়), রাগ গৌরী ভৈরব আধারে “দিবানা কিয়ে শ্যাম”। এই পর্বের সহযোগীরা ছিলেন হিন্দোল মজুমদার (তবলা) ও সনাতন গোস্বামী (হারমোনিয়াম)। এদিনের অপর পরিবেশনা ছিল ‘থার্টি ফিঙ্গারস অফ পন্ডিত শঙ্খ চট্টোপাধ্যায়’। যেটার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘শঙ্খ চট্টোপাধ্যায়ের তিরিশটি আঙুল’। তাঁর তিন ছাত্র বিশিষ্ট তবলাবাদক অমিত চ্যাটার্জি (সম্পর্কে ভ্রাতুষ্পুত্র), শুভজ্যোতি গুহ ও মিহির কুন্ডু ছিলেন এই উপস্থাপনায়। হারমোনিয়ামে নগমা রেখেছিলেন সনাতন গোস্বামী । সনাতনের সূচনায় আরম্ভ হয় । পরে তাঁরা উপস্থাপন করলেন পেশকার, ছন্দ, কায়দা, কায়দা (একে একে প্রত্যেকে দেখালেন, পণ্ডিতজির রচনায), রেলা পরপর, অনাগত, চক্রদার। উপভোগ্য অসামান্য এই পর্বের সমাপন হয় একটি পরণে, যেটির শিক্ষা তাঁরা গুরুজির কাছ থেকে পেয়েছিলেন।

Advertisement

দ্বিতীয় সন্ধ্যা শুরু হয় অর্জুন রায়ের কন্ঠে রাগ মুলতানি পরিবেশনে। তরুণ এই শিল্পী তাঁর পরিবেশন শেষ করলেন একটি কবীর-ভজন গেয়ে। এরপর ছিল যন্ত্রসংগীত। আরেক তরুণ অপ্রতিম মজুমদার সরোদে শোনালেন রাগ মধুবন্তী। আলাপ পর্বের পর পরিবেশন করেন গত। তার এই পরিবেশন পর্বে তবলায় সহযোগ প্রদান করেন আরেক তরুণ বোধিমন দাশগুপ্ত । এরপর ছিল আবার কন্ঠ পরিবেশন পর্ব, কসুর– পাতিয়ালা ঘরানার বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী নভোদীপ চক্রবর্তীর । তিনি শোনালেন রাগ পুরিয়া। উপস্থাপনাকে সাজান তিনটি বন্দিশে- বিলম্বিত (একতাল), দ্রুত (ত্রিতাল) ও শেষ করেন একখানি তারানায় যেটি একতালে আবদ্ধ ছিল। তারপরে শোনালেন রাগ আনন্দী কল্যাণ (ত্রিতালে); যেটি আমরা রাগ নন্দ বলেও জানি। এই পরিবেশনার শেষ হয় মাঝ খাম্বাজের একটি বন্দিশী ঠুংরি দিয়ে। তাঁকে সহযোগিতা করেন মিহির কুন্ডু (তবলা) ও প্রদীপ পালিত (হারমোনিয়াম)। আর তবলা শিল্পী ত্রয়ীর পরিবেশনা দিয়ে শেষ হলো এবারকার মত এই ফেস্টিভ্যাল। ফারুকাবাদ ঘরানার ‘খলিফা’ বলে পরিচিত উস্তাদ সাবির খান মঞ্চে বসেন দুই পুত্র আরিফ খান ও আসিফ খানকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি তাঁর উপস্থাপনার পুরোটাই ত্রিতালের বাঁধনে পেশ করেন। হারমোনিয়ামে নগমা রেখেছিলেন দেবাশিস কর্মকার। ফেস্টিভ্যালের দুদিনের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সোনালি চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

Advertisement