চেতনা মুরারি স্মৃতি সংগীত সম্মেলনী সংস্থার আয়োজনে হয়ে গেল তাদের ৮৪ তম বর্ষের শাস্ত্রীয় সংগীতের অনুষ্ঠান। সেটি হল চেতলার অহীন্দ্র মঞ্চে। ডিসেম্বরে ২১ তারিখে প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সূচনা করেন সংস্থার সভাপতি মনোতোষ দাশগুপ্ত। তার সঙ্গে ছিলেন সম্পাদক দিলীপ মিশ্র এবং সহ-সম্পাদক ও সম্মেলনের কিউরেটর দীপ্তেশ মিশ্র। শোনা গেল সভাপতির ভাষণ। এরপর শুরু হল প্রথম দিনের অনুষ্ঠান। উল্লেখ্য যে, এই সন্ধ্যায় মূলত ২০২৪ ও পুরনো কয়েকটি সালের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা সংগীত পরিবেশনে অংশ নেন। শুরু হয় তবলা লহরা মাধ্যমে। দীপরঞ্জন ঘোষ ত্রিতাল আধারে তবলা পরিবেশন করেন (শান্তিনিকেতন থেকে আগত)। নগমায় ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য। স্বর্ণদীপ ঘোষ (বিষ্ণুপুর থেকে) খেয়াল পরিবেশন করেন, যোগ রাগে। গলা ভালো, পরিবেশনা ভালো লাগে। এরপর ছিল রাজকুমার মজুমদারের (দিল্লি থেকে আগত) সন্তুর বাদন, কিরওয়ানি রাগে (রূপক ও ত্রিতাল)। তবলায় সহযোগ দেন সুবীর অধিকারী (শিলিগুড়ি থেকে)। ২০২০ সালের কণ্ঠসঙ্গীত বিভাগের বিজয়িনী স্বর্ণালী রায়চৌধুরী ঠুমরি, দাদরা রাগাশ্রয়ী বাংলা গান (শিপ্রা বসু) পরিবেশনা ভালো লাগলো। তবলায় ছিলেন অর্পণ ভট্টাচার্য, হারমোনিয়ামে সায়ন চ্যাটার্জি, গিটারে সায়ন্তন বিজলী। ২০২৪ সালের চ্যাম্পিয়ন সৌভিক পাল কত্থক নৃত্য পরিবেশন করেন ভালো লাগালেন। এই সন্ধ্যার শেষলগ্নে ছিল সুপরিচিত নন্দিনী চক্রবর্তীর শ্যাম কল্যাণ রাগে খেয়াল পরিবেশনা। তবলায় ছিলেন ইমন সরকার এবং সুব্রত ভট্টাচার্য হারমোনিয়ামে।
দ্বিতীয় সন্ধ্যার অনুষ্ঠান শুরু হয় কেন জ্যুকারম্যানের সরোদবাদনে। সঙ্গে ছিলেন উন্মেষ ব্যানার্জি (তবলা)। পরিবেশন করেন মাইহার ঘরের বিশেষ রাগ দুর্গেশ্বরী,যেটি সৃষ্টি করেছিলেন বাবা আলাউদ্দিন খাঁ। আলাপ – জোড় এবং পরে তিনখানি গত পরিবেশন করেন (ত্রিতাল আধারে)। ছিল আরেকটি রাগ চন্দ্রনন্দনের উপস্থাপনা, মধ্যলয় ও পরে দ্রুত গতে। (ত্রিতাল আধারে)। বিশিষ্ট কন্ঠশিল্পী আইভি ব্যানার্জি এরপর আসেন উপ-শাস্ত্রীয় পরিবেশনার ডালি নিয়ে । শোনালেন ঠুংরি (খাম্বাজ ও ভৈরবীতে)। পরে শায়েরী— গজল। উপভোগ্য এই পর্বে সহযোগিতা করেন আবির মুখার্জী (তবলা) ও রতন ভট্টাচার্য (হারমোনিয়াম)। বিষ্ণুপুর ঘরের জীবন্ত কিংবদন্তী সংগীতাচার্য পন্ডিত অমিরঞ্জন বন্দোপাধ্যায় সংগীত উপস্থাপনা ছিল এর পরপরই । রাগ জয়জয়ন্তী আশ্রিত বিলম্বিত “লরা মাঈ সজনী” (একতাল) ও দ্রুত “মোরে মন কী বাতিয়া” (ত্রিতাল)। এই পর্বে সহযোগিতা করে যেন ধন্য হলেন অরুময় দেব (তবলা) ও শুভ্রকান্তি চ্যাটার্জি (হারমোনিয়াম)। সবশেষে ছিল এদিনের অপর বিশেষ আকর্ষণ! পণ্ডিত স্বপন চৌধুরীর তবলা লহরা। হারমোনিয়ামে নিয়ে বসেছিলেন হিরণ্ময় মিত্রকে। ত্রিতালে উপস্থাপনা গুলি ছিল— পেশকার, কায়দা, কায়দারেলা, টুকড়া, গৎ, পরণ, চক্রাধার।
Advertisement
Advertisement
Advertisement



