• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

আস্থাভোটে জয়ী উদ্ধব ঠাকরে

শক্তি পরীক্ষা শুর হওয়ার আগে ফড়নবিশের নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি বিধায়করা আগে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান।

শপথ নিচ্ছেন উদ্ধব ঠাকরে। (Photo: IANS)

মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন থেকে বিজেপি বিধায়করা ওয়াক আউট করার পর প্রত্যাশিতভাবে আস্থা ভােটে জয়ী হল উদ্ধব ঠাকরে নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। শক্তি পরীক্ষা শুর হওয়ার আগে ফড়নবিশের নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি বিধায়করা আগে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান। তাঁদের দাবি, কালিদাস কোলাম্বারের  জায়গায় কেন এনসিপি নেতা দিলীপ ওয়ালসে পাটিলকে অস্থায়ী স্পিকার করা হয়েছে। আগামিকাল স্পিকার নির্বান করা হবে।

আস্থা ভােটে জয়ের পর উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘বিধানসভায় আসার আগে বেশ চাপের মধ্যে ছিলাম, বিধানসভায় কিভাবে কাজ হয় তা সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা ছিল না। তবে নিজেকে বিধানসভায় সদস্য হিসেবে দেখে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে’। শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোট সরকার ১৬৯টি ভােট পেয়েছে, যা ২৮৮ আসনের বিধানসভায় প্রয়ােজনীয় ১৪৫ সংখ্যার থেকে বেশি। জোটে দলগুলির মােট বিধায়ক সংখ্যা ১৫৪জন ও নির্দল বিধায়করাও রয়েছে।

Advertisement

উদ্ধব ঠাকরে সহ দলের প্রত্যেকে গেরুয়া পাগড়ি মাথায় বেঁধে বিধান ভবনে এসেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বিধায়কদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমার ওপর বিশ্বাস রাখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। মহারাষ্ট্রের জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁদের আশীর্বাদ ছাড়া আমাদের কাজ করা সম্ভব নয়’। উদ্ধৰ পুত্ৰ আদিত্যও হাজির ছিলেন।

Advertisement

বিজেপি নেতা ফড়নবিশ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সহ মন্ত্রীরা বেআইনিভাবে শপথ গ্রহণ করেছে’। প্রােটেম স্পিকার বলেন, ‘আপনি এমন বিষয় নিয়ে আলােচনা করছেন, যা বিধানসভার কাজকর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়’। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত স্পিকার ছাড়া এই প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভায় আস্থা ভােট সম্পন্ন হল’। পাটিল বলেন, ‘রাজ্যপালের অনুমতিতে বিশেষ সভার আহ্বান করা হয়েছিল’। বিজেপি’র তরফে স্পিকার পদের নির্বাচনে কিশান এস কাঠোর ও জোট কংগ্রেস বিধায়ক নানা পাটোলেমকে দাড় করিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘আমরা শপথ গ্রহণের সময় ছত্রপতি শিবাজির নাম করাতে আপনারা (বিজেপি) অবাক হয়ে গেছিলেন। আমি বারবার তাঁর নাম করব। অভিভাবকের নাম যারা করতে চায় না তাদের বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই’। 

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ভােটাভুটির আগেই ওয়াক আউট করল বিজেপি। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা যাচাইয়ে সভা পরিচালনার জন্য প্রােটেম স্পিকার নিযুক্ত হন এনসিপি’র দিলীপ ওলাসে পাতিল। এর আগে নিযুক্ত প্রােটেম স্পিকার বিজেপির কালীদাস কোলাম্বারকে সরিয়ে দিলীপ পাতিলকে প্রােটেম স্পিকার করার প্রতিবাদেই বিজেপি সভাকক্ষ ত্যাগ করে। এর আগে কখনও প্রােটেম স্পিকারকে সরানাের কোনও নজির নেই বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। তবে কেন প্রােটেম স্পিকার পরিবর্তন করা হল- প্রশ্ন তােলেন ফড়নবিশ। কিসের এত ভয়। এর পরেই ফড়নবিশের নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়ক সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। এছাড়া, বিশেষ অধিবেশন প্রথা অনুযায়ী বন্দেমাতরম সঙ্গীত ছাড়াই শুরু হয়েছে। এতে প্রচলিত প্রথা এবং রুলের লঙঘন করা হয়েছে।

ফড়নবিশ আরও অভিযােগ করেন, বিশেষ অধিবেশন সম্পর্কে বিজেপি বিধায়কদের গভীর রাতে জানানাে হয়েছে। এর পিছনে একটাই কারণ রয়েছে, যাতে বিজেপি বিধায়করা বিশেষ অধিবেশনে সময়ে পৌঁছতে না পারেন। ফড়নশি অভিযােগ করেন, উদ্ধব ঠাকরে ও অন্যান্য মন্ত্রীরাও ‘বেআইনি’ পদ্ধতিতে শপথ নিয়েছেন।

প্রােটেম স্পিকার দিলীপ পাতিল জানান, রাজ্যপালের অনুমতি নিয়েই বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। রাজ্যপাল এতে সম্মতি দেওয়ার পরই অধিবেশন ডাকা হয়েছে। আর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যে সকল অভিযােগ করছেন সেগুলি বিধানসভার এক্তিয়ার বহির্ভূত। ফলে কোনওভাবেই রুল লঙঘন করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

বিজেপি’র বিধায়করা সভাকক্ষ ত্যাগ করার পর কংগ্রেস নেতা অশােক চহ্বাণ ভােটাভুটির প্রস্তাব করেন। শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের মহা বিকাশ জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণিত হয় ১৬৯ ভােটে।

বিজেপির ১০৫ বিধায়ক গণনার আগেই সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। এনসিপি নেতা নবাব মালিক জানান, রাজ্যপালের অনুমতি সাপেক্ষেই ওয়ালসে পাতিলকে প্রােটেম স্পিকার নিযুক্ত করা হয়। অধিবেশন শুরু হয় রাজ্যপালের অনুমতি নিয়েই। তিনি বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরােধীদের আচরণ কেমন হবে তা দলের প্রবীণ নেতাদের কাছে শিক্ষা নেওয়া উচিত। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনেই জোট সরকার গঠিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বিরােধীদেরও সরকার গঠনে যে একটা সদর্থক ভূমিকা থাকে সেটাই বিজেপির পরিষদীয় দলের নেতার অজানা। এটা কোনও ব্যক্তিগত বিদ্বেষের ব্যাপার নয়। পারস্পরিক বােঝাপড়ার মাধ্যমেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। মহারাষ্ট্রে কখনও প্রতিহিংসার বাতাবরণ তৈরি হয়নি। এখনও তার ব্যতিক্রম হবে না। জোট সরকার কারও প্রতি বিদ্বেষ পােষণ করে না। রাজ্যের সামগ্রিক মঙ্গলের জন্যই জোট সরকার কাজ করবে বলে জানান মালিক।

নতুন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে খোলা মনে অভিনন্দন জানানাের জন্য দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে আহ্বান জানান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা অশােক চহ্বাণ।

Advertisement