নেপালের তরুণ প্রজন্মের রোষ এবার সরাসরি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দিকে। তাঁদের অভিযোগ, আন্দোলনের গর্জন থামাতে পুলিশের গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং ওলি। সেই নির্দেশেই রক্তে লাল হয় নতুন বানেশ্বরের রাস্তা। প্রাণ হারান অন্তত ১৯ জন আন্দোলনকারী। এ ঘটনার পর থেকেই সরব ‘জেন জি’। তাঁদের একটাই দাবি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।
শনিবার কাঠমান্ডুতে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে সংগঠনের উপদেষ্টা ড. নিকোলাস ভূষাল বলেন, ‘ওলি একা নন, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক এবং জেলা প্রশাসক ছবি রিজালও সমানভাবে দায়ী। এঁদের অবিলম্বে হেফাজতে নেওয়া উচিত।’ ভূষালের অভিযোগ, নেতারা শুধুই ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি, একইসঙ্গে বিপুল সম্পদও গড়ে তুলেছেন। কীভাবে এই সম্পত্তি এল, তা নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি তুলেছে তরুণরা।
প্রসঙ্গত, কাঠমান্ডুর সিংহ দরবার এলাকায় এখন চলছে টানা বিক্ষোভ-অবস্থান। ‘জেন জি’ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ওলিকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা চাই।
উল্লেখ্য, দুর্নীতি আর স্বজনপোষণের অভিযোগ ওলি সরকারের বিরুদ্ধে আগে থেকেই প্রবল ছিল। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ দীর্ঘদিন ধরে জমছিল। এরই মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর আচমকা নেপালে নিষিদ্ধ করা হয় ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ প্রায় সব ধরনের সোশাল মিডিয়া। এই সিদ্ধান্তে উত্তাল হয়ে ওঠে তরুণ সমাজ। শুরু হয় তীব্র আন্দোলন, যা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভয়াবহ হিংসাত্মক রূপ নেয়। মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছয় অন্তত ৭২-এ, আহত হন প্রায় দু’হাজার মানুষ।
জনরোষ সামলাতে ব্যর্থ হয়ে ইস্তফা দেন কেপি শর্মা ওলি। তারপর দেশ ছেড়েও পালিয়ে যান। কিন্তু তাতে তরুণদের ক্ষোভ থামেনি। আন্দোলনকারীদের মতে, ‘ওলিকে না জবাবদিহি করানো পর্যন্ত নেপালের গণতন্ত্র পূর্ণতা পাবে না।’