গত শনিবার যুবনেতা ওসমান হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছিল ইনকিলাব মঞ্চ। সেই সঙ্গে ইউনূস সরকারের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতার পদত্যাগের দাবিও জানায় তারা। তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও জানতে চাওয়া হয়। এই আবহেই এবার পদত্যাগ করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরী। বুধবার রাতে দেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। খোদাবক্সের ইস্তফাপত্র গ্রহণও করেছেন রাষ্ট্রপতি। তবে হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত, তা নিয়ে সরকারি ভাবে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
বুধবার রাতে বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিজ্ঞপ্তি দিয়ে খবরটি জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরীর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন, সেটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গড়া হয়। প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় তিন জনকে বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রকের উপদেষ্টাদের সহযোগিতায় তিন প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন পুলিশের প্রাক্তন আইজি খোদাবক্স। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন অধ্যাপক সায়েদুর রহমান এবং অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম। আমিনুল কয়েক মাস আগেই পদত্যাগ করেন। এবার পদত্যাগ করলেন খোদাবক্স।
গত ১২ ডিসেম্বর গুলি করা হয় শরিফ ওসমান হাদিকে। গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর রাতে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মারা যান ওই যুবনেতা। এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখন অধরা হাদির খুনি। তবে কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা বলে মনে করা হচ্ছে। তাই তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চেয়ে ইউনূস সরকারকে শনিবারই ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ইনকিলাব মঞ্চ। সময়সীমার মধ্যে সদুত্তর দিতে না পারলে ইউনূস সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক) খোদাবক্সের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছিল।
ইনকিলাব মঞ্চের আবদুল্লা আল জাবের বলেছিলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের জনসমক্ষে এসে বলতে হবে, গত এক সপ্তাহে তদন্ত কত দূর এগিয়েছে। এর জবাব না দিতে পারলে তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে।’ তবে সেই সময়সীমা অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এখনও হাদির হত্যাকারীদের বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কোনও তথ্য জানাতে পারেনি বাংলাদেশের তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এরপর ফের অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি দেয় ইনকিলাব মঞ্চ। ইউনূস সরকারকে ফেলে দেওয়ার কথা জানায় তারা। সেই সঙ্গে ‘খুনের সব দায় নিয়ে’ ইউনূসের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিশেষ সহকারী এবং আইন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। এরপরেই পদত্যাগ করলেন বিশেষ সহকারী খোদাবক্স।