বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের উপর চাপ ক্রমশই বাড়ছে। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দল বিএনপি-র পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি। প্রয়াত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হুসেন মহম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের বৃহস্পতিবার বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়ে মতামত জানতে সরকার আমাদের ডাকেনি। সংস্কার প্রসঙ্গে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনাও হয়নি। আমাদের সঙ্গে আলোচনা হলে আমরা এটাই বলব, ‘সংস্কার প্রস্তাবগুলো প্রকাশ করুন। নির্বাচনের পরে যারা সরকার গঠন করবে, তারাই সংস্কার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে’।’
সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্য আগেই খারিজ করে দিয়েছিল খালেদা জিয়া দল। এবার তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির তরফে জানানো হয়েছে, এখনই সংস্কারে হাত না দেওয়ার পক্ষেই মত দিচ্ছেন তাঁরা। এরপরই জিএম কাদের ঘোষণা করেন যে, ‘যদি নির্বাচনে নিরপেক্ষতা না থাকে, যদি একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে তবে কোনও বিশেষ পক্ষের নির্বাচনে বৈধতা দিতে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে না।’
২০২৪-এর আগস্ট মাসে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও বৈধ নির্বাচনের দাবিতে সরব হয় সেই দেশের রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু নির্বাচন কীভাবে হবে, , নির্বাচনে নিরপেক্ষতা কীভাবে বজায় রাখা হবে, এই সমস্ত একাধিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিবাদ ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচন নিয়ে চাপ বাড়াচ্ছে জাতীয় দলগুলির উপর। বিএনপি যেমন দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইছে, তেমনই দ্রুত নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে জামাত। তারা নির্বাচনের আগে সংস্কারের জন্য চাপ বাড়াচ্ছে ইউনূস সরকারের উপর। খালেদার পুত্র তথা দলের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যবস্থা যদি ঠিক করতে না পারি, তবে দেশের কোনও কিছুরই সমাধান হবে না। ঝড়, তুফান, বন্যা, খরা, বৃষ্টি যা–ই হোক না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতেই হবে। এর কোনও বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যের পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে আমরা তাঁদের প্রতিহত করব।’
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সংস্কারে জোর দিলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণভা্বে নিয়ন্ত্রণে আমতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এই অবস্থায় দ্রুত একটি নির্বাচিত সরকার না এলে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিতে পারে। গত ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা জানিয়েছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, অল্প সংস্কারের পর নির্বাচন চাইলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে , আর একটু বেশি সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।