বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিলেন ইউনূস

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

গত বছর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই পালাবদল ঘটে বাংলাদেশে। কুর্সিতে বসেন মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। তাঁর আমলে বাংলাদেশে হিন্দু থেকে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিন্দু সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তার থেকে হিন্দুদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে সেই সব খবর দেখানো হয়।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস দাবি করছেন, তাঁর আমলে দেশে হিন্দুদের উপর কোনও অত্যাচার হয়নি। সবটাই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভুয়ো এবং রটানো খবর। সম্প্রতি মার্কিন সাংবাদিক মেহদি হাসানের এক সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ‘এখন ভারতের এক বিশেষত্বই হল ফেক নিউজ। একের পর এক ভুয়ো খবর ছড়ানো।’

তাহলে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের খবরগুলি সবই মিথ্যে?  সেই প্রশ্নের ভিত্তিতে ইউনূস বলেন, যেগুলি ঘটেছে সেগুলি সবই স্থানীয়স্তরে। প্রতিবেশীদের মধ্যে ঝামেলা, কোথাও জমি বিবাদ। এগুলির সঙ্গে সাম্প্রদায়িক অশান্তির কোনও যোগ নেই। পদ্মা পাড়ে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের খবরও ভুয়ো বলে জানিয়েছেন ইউনূস।


হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মুখ খুলেছিলেন। সেই বিষয়ে বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ট্রাম্প এই ধরণের কোনও মন্তব্য করেছেন বলে জানি না। বাংলাদেশে বর্তমানে কী চলছে সেটা ট্রাম্প বোধ হয় জানেন না।’

গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু ঢাকা শহরে মিছিল করেছিলেন। তাঁরা ইউনূস সরকারের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেন। অভিযোগ তোলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বারবার হামলা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি, হিন্দু নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়।

ইউনূসের বক্তব্য, বাংলাদেশে হিন্দুরা নিজেদের নাগরিক পরিচয়ে আত্মবিশ্বাসী হলে তবেই সুরক্ষিত বোধ করবেন। তাঁর কথায়, ‘আমি যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেখা করি, তখন বলি, নিজেদের শুধু হিন্দু হিসেবে নয়, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দেখুন। বলুন, আমি এই দেশের নাগরিক, তাই রাষ্ট্রের কাছ থেকে আমার সুরক্ষার অধিকার আছে। তখনই আপনারা আরও বড় পরিসরে সুরক্ষা পাবেন।’