নতুন আবেদনকারীদের জন্য চড়া মূল্য, এইচ-১বি ভিসা নিয়ে জানাল হোয়াইট হাউস

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

নতুন ভিসানীতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিবৃতি দিল হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এককালীন এই চড়া মূল্য শুধুমাত্র নতুন আবেদনকারীদের জন্যই প্রযোজ্য হবে। যাঁদের আগে থেকেই এই ভিসা রয়েছে, তাঁদের নতুন করে কোনও মূল্য দিতে হবে না। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসা নিয়ে নতুন নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যা রবিবার থেকেই কার্যকর হয়েছে। নতুন এই নিয়মে বলা হয়েছে, এখন থেকে এইচ-১বি ভিসার আবেদনকারীদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হবে, যা এক লক্ষ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা)।

তবে এই নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সেই কারণে শনিবার গভীর রাতে ভিসা-নীতির নিয়মকানুন খোলসা করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। তিনি জানান, নতুন এই নিয়ম অনুযায়ী, এই এক লক্ষ ডলার কোনও বার্ষিক ফি নয়, বরং এটি একটি এককালীন অর্থপ্রদান। এটি শুধুমাত্র নতুন ভিসার আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ, যাঁরা প্রথমবার এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করছেন, কেবল তাঁরাই এই টাকা দেবেন।

এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রথমে মার্কিন সংস্থাগুলির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। অনেক সংস্থা ভেবেছিল, তাদের বিদেশি কর্মীদের বার্ষিক ভিত্তিতে এত বড় অঙ্কের অর্থ দিতে হবে, যা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এমনকি অনেক সংস্থা তাদের কর্মীদের দেশ ছাড়তে নিষেধ করে দেয়। যাঁরা আমেরিকার বাইরে ছিলেন, তাঁরাও দুশ্চিন্তায় পড়েন। তাঁরা ভেবেছিলেন, ভিসা থাকলেও দেশে ফিরতে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হবে।


তবে হোয়াইট হাউস পরে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, যাঁদের ইতিমধ্যে এইচ-১বি ভিসা রয়েছে, তাঁরা আগের নিয়মেই চলবেন। অর্থাৎ, এই নতুন নিয়ম ভিসা পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রে বা দেশে পুনঃপ্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব ফেলবে না। যাঁরা বর্তমানে দেশে রয়েছেন বা বাইরে থেকেও বৈধ ভিসা নিয়ে ফিরে আসতে চান, তাঁদের কোনও বাড়তি অর্থ দিতে হবে না।

প্রসঙ্গত, এইচ-১বি ভিসা এক ধরনের অ-অভিবাসী কর্মসংস্থান ভিসা। এটি সাধারণত তিন বছরের জন্য দেওয়া হয় এবং ছ’বছর পর্যন্ত বাড়ানো যায়। এই সময়ের মধ্যে কর্মীরা মার্কিন গ্রিন কার্ডের (স্থায়ী নাগরিকত্ব) জন্য আবেদন করতে পারেন। ফলে এই ভিসা শুধু কাজের সুযোগ নয়, ভবিষ্যতে আমেরিকায় স্থায়ী হওয়ার পথও তৈরি করে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন এই নিয়ম বিদেশি কর্মীদের জন্য আমেরিকায় কাজ পাওয়া কঠিন করে তুলবে, কারণ এত বড় অঙ্কের এককালীন অর্থপ্রদান সংস্থাগুলির পক্ষে সব সময় সম্ভব হবে না।

বর্তমানে এইচ-১বি ভিসাধারী কর্মীদের মধ্যে ভারতের অবস্থান শীর্ষে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এইচ-১বি ভিসার মোট মঞ্জুর হওয়া আবেদনগুলির মধ্যে ৭১ শতাংশই ভারতীয়দের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিন, যেখান থেকে ১১.৭ শতাংশ আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের নতুন এইচ-১বি নীতির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়তে চলেছে ভারতীয় কর্মীদের ওপর। অনেক প্রতিভাধর ও দক্ষ কর্মী আমেরিকায় কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন শুধুমাত্র অতিরিক্ত খরচের কারণে।