ললিত মোদীর পাসপোর্ট বাতিল করল ভানুয়াতু

বড় ধাক্কা খেলেন আইপিএল আর্থিক তছরুপ মামলায় অভিযুক্ত ললিত মোদী। তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করে দিল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতু। সেখানকার প্রধানমন্ত্রী জোথাম নাপাট ললিতের পাসপোর্ট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। নাপাট বলেন, আমি নিজে নাগরিকত্ব কমিশনকে ললিত মোদীর ভানুয়াতুর পাসপোর্ট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছি। সম্প্রতি ইন্টারপোল তরফে সতর্ক করার জেরেই তাঁকে দেওয়া পাসপোর্ট ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কয়েকদিন আগেই ভারতের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিতে চেয়ে লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে আবেদন করেন ললিত মোদী। সেই সময় জানা যায়, ভানুয়াতুর পাসপোর্ট পেয়েছেন তিনি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ললিত মোদী পাসপোর্ট জমা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। আবেদনটি খতিয়ে দেখা হবে। উনি ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব পেয়েছেন। সেই দিকটিও আমরা খতিয়ে দেখব। আইন অনুযায়ী ওঁর বিরুদ্ধে যা করা সম্ভব, আমরা করছি।

এদিকে ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যথাযথ কারণ ছাড়া ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব নয়। কোনও দেশে প্রত্যর্পণের হাত থেকে বাঁচতে কেউ তাঁদের দেশের নাগরিকত্ব চাইলে, তা বৈধ কারণ হিসাবে বিবেচিত হবে না। সাম্প্রতিক যে তথ্য সামনে এসেছে, তা থেকে স্পষ্ট যে প্রত্যর্পণ এড়াতেই ললিত মোদী এখানকার নাগরিকত্ব নিতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই ললিত মোদীর নাগরিকত্ব বাতিলের পাশাপাশি পাসপোর্ট ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আইপিএলের শীর্ষপদে থাকাকালীন বিপুল অঙ্কের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ললিতের বিরুদ্ধে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রচুর টাকাও তিনি নয়ছয় করেছেন বলে দাবি তদন্তকারী এজেন্সিগুলির। ২০১০ সালে ললিত ভারত ছাড়েন। তার পর থেকে লন্ডনেই আছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে। তবে ললিতকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আমলে ললিতের বিরুদ্ধে তদন্ত থমকে রয়েছে। প্রত্যর্পণের ব্যাপারেও উদ্যোগী নয় এজেন্সিগুলি।

অন্যদিকে, ১৯৮০ সালে স্বাধীন হওয়া ভানুয়াতুর জনসংখ্যা তিন লক্ষের সামান্য কিছু বেশি। ভানুয়াতুর নাগরিকদের কোনও আয়কর জমা দিতে হয় না। এর পাশাপাশি কর্পোরেট ট্যাক্স, গিফট ট্যাক্স, এস্টেট ট্যাক্সের ব্যাপার নেই। বিপুল পরিমাণ অর্থ থাকলেই প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপপুঞ্জের নাগরিক হওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গের কয়লা পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রও ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নিয়েছেন।