আদালতে বড় ধাক্কা ট্রাম্পের, মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্কনীতি রদ করল কোর্ট

মার্কিন আদালতে বড়সড় ধাক্কা খেলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর আরোপিত যাবতীয় শুল্কনীতি স্থগিত করে দিয়েছে আমেরিকার আদালতের তিন বিচারকের প্যানেল। আমেরিকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক একটি আদালত জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প তাঁর যে আইনি বাধ্যবাধকতা, তাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। অর্থাৎ, মার্কিন আইনসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা না করেই একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চলেছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কুশ দেশাই জানিয়েছেন, দেশে জরুরি পরিস্থিতির মোকাবিলা কী করে করতে হবে, তা অনির্বাচিত বিচারকেরা স্থির করে দিতে পারেন না।

১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট ব্যবহার করে ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের উপর ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, যে দেশ আমেরিকার পণ্যের উপর যত পরিমাণ শুল্ক চাপায়, ঠিক তত পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হবে সংশ্লিষ্ট দেশের রপ্তানি করা পণ্যে। বিভিন্ন দেশের উপর ১০ থেকে ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপিয়েছিলেন ট্রাম্প। ভারতের উপরেও চাপানো হয়েছিল ২৬ শতাংশ শুল্ক। এর জেরে বিশ্ববাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেয়। সপ্তাহখানেক বাদে চিন ছাড়া বাকি দেশগুলোর উপর ৯০ দিনের জন্য শুল্কনীতি স্থগিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই। আপাতত সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই শুল্কনীতির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার নামের একটি আইনি সংস্থা। ট্রাম্পের শুল্কের নিশানা হওয়া দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানি করে- এমন পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মামলাটি করেছিল তারা। অপর মামলাটি করা হয়েছিল আমেরিকার ১৩টি অঙ্গরাজ্যের পক্ষ থেকে। শেষ পর্যন্ত আদালত ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিপক্ষেই রায় দিল। তিন বিচারক জানিয়েছেন, ওই নীতির আইনগত দিক পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর থেকেই আমেরিকার শেয়ার বাজারগুলিতে পতনের মাত্রা বেড়েছিল। তবে বুধবার আদালতের এই রায়ের পরেই চাঙ্গা হয়েছে মার্কিন ডলার। একই সঙ্গে সে দেশের শেয়ার বাজারেও ইতিবাচক ইঙ্গিত দেখা গিয়েছে।


নিউ ইয়র্কের আদালতের এই রায়ে খুশি নয় ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে। আদালতে ধাক্কার পর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কুশ দেশাই বলেছেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতি ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির পরিস্থিতি ডেকে এনেছে। যা আমেরিকানদের উপর প্রভাব ফেলেছে। আমাদের কর্মীরা পিছিয়ে পড়েছেন, আমাদের ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেস দুর্বল হয়েছে। এই সমস্ত ফ্যাক্টর আদালত খতিয়ে দেখেনি। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কী ভাবে বিবেচিত হবে, তা অনির্বাচিত বিচারকরা ঠিক করতে পারে না।’