রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি পুরোপুরি বন্ধের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলির প্রতি আহ্বান জানালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে ট্রাম্প দাবি করেন, ইউরোপ যদি রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস কেনা বন্ধ করে দেয়, তাহলে যুদ্ধ থামিয়ে দিতে বাধ্য হবে মস্কো। তাঁর মতে, জ্বালানি বিক্রি করেই যুদ্ধ চালানোর জন্য মূলধন সংগ্রহ করছে রাশিয়া।
ট্রাম্প জানান, গত এক বছরে ইউরোপে জ্বালানি রপ্তানি করে প্রায় ১১০ কোটি ইউরো আয় করেছে পুতিনের দেশ। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধাপে ধাপে রাশিয়ার জ্বালানি আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই অনুযায়ী ২০২৮ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইন প্রণয়নের কাজও চলছে বলে জানা গিয়েছে।
শুধু রাশিয়াই নয়, চিনের বিরুদ্ধেও অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করার কথা বলেছেন ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনে চিন বিশেষ ভূমিকা পালন করছে এবং পরোক্ষভাবে মস্কোকে সমর্থন জুগিয়ে চলেছে। এদিকে, নিউ ইয়র্কের একটি আদালত সম্প্রতি জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে বিভিন্ন দেশের উপর চাপানো শুল্কের অনেকগুলোই বেআইনি ছিল। যদিও এই রায় চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
আমেরিকার যুক্তি, আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে এই শুল্ক চাপানো হয়েছে, বিশেষ করে ভারতের উপর। মার্কিন প্রশাসনের দাবি, ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনছে বলেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের বাণিজ্য নীতিকে শান্তি ফেরানোর কৌশল হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছে হোয়াইট হাউস। তবে ভারতের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ নাকচ করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসী ভূমিকায় রাশ টানতে এবং শান্তি স্থাপনে সহায়তার ক্ষেত্রে ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়ে সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’