সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে ২০০ বিলিয়ন ডলারের একাধিক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। আবুধাবিতে আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক হয়। দুই দেশের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ জানায়, আমেরিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এআই অ্যাকসেলারেশন পার্টনারশিপ নামে একটি পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একমত হয়েছে দুই দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মধ্যে সুসম্পর্ক নিয়ে প্রশংসা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১০ বছরে আমিরশাহি যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। ইতিমধ্যেই ২০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে ফেলেছেন ট্রাম্প।
আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহেনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময়ের ভাল বন্ধু।’ জায়েদ আল নাহেনের বক্তব্য, ‘বিশ্ব ব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও আমেরিকা একসঙ্গে কাজ করবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সফরের মধ্যে আবুধাবিতে উদ্বোধন হয় ‘ফাইভ-জি ডব্লু ইউএই-ইউএস এআই ক্যাম্পাস’। ট্রাম্প ও আল নাহিয়ান পাঁচ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন এআই ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এআই সেন্টার। চুক্তির বিষয়ে কর্মকর্তারা বলেছেন, এই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত এআই চিপে অধিকতর অ্যাক্সেস পাবে আরব আমিরশাহি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে এই প্রযুক্তি চীনের হাতে চলে যেতে পারে- এই আশঙ্কায় এতদিন এই বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল মার্কিন প্রশাসন।
হোয়াইট হাউস জানায়, এআই চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি যুক্তরাষ্ট্রে এমন ডেটা সেন্টারে বিনিয়োগ, নির্মাণ , বিনিয়োগ করবে, যেগুলোর আকার ও সক্ষমতা ইউএইতে বিদ্যমান ডেটা সেন্টারের সমপর্যায়ের হবে বা তার চেয়েও বেশি হবে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, আমিরশাহির বিমান সংস্থা ইতিহাদ এয়ারওয়েজের পক্ষ থেকে ২৮টি বোয়িং ৭৮৭ এবং ৭৭৭এক্স বিমান কিনতে সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। এসব বিমানে ব্যবহৃত হবে জিই এয়ারোস্পেসের তৈরি ইঞ্জিন।
এই সফরে ট্রাম্প প্রযুক্তি, ব্যবসা ও প্রতিরক্ষা খাতে কয়েকটি লাভজনক চুক্তি সম্পন্ন করেছেন। তার কথায় সব মিলিয়ে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। সফরের প্রথমেই তিনি যান সৌদি আরবে। এরপর কাতার হয়ে যান সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ট্রাম্প আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদ ঘুরে দেখেন। এর পরে দুই দেশের প্রধান একসঙ্গে নৈশভোজ সারেন। আপাতত, দু’দেশেরই নজর ‘এআই’-এর মাধ্যমে সম্পর্ক মজবুত করার লক্ষ্যে।