২০২৮-এর মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস কেনা বন্ধ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

সোমবার লুক্সেমবার্গে বৈঠকে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় কাউন্সিল। প্রাথমিকভাবে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি ধাপে ধাপে কমানো হবে এবং ২০২৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সম্পূর্ণভাবে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে ইউরোপের এই সিদ্ধান্তের পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপই মুখ্য ভূমিকা রেখেছে বলে অনেকের ধারণা। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন যে, রাশিয়া তেল বিক্রির অর্থ ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ব্যবহার করছে। গত মাসে তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সতর্ক করে বলেছিলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করলেই যুদ্ধের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল হবে।
ট্রাম্পের দাবি, গত এক বছরে ইউরোপে তেল ও গ্যাস বিক্রি করে মস্কো প্রায় ১১০ কোটি ইউরো উপার্জন করেছে, যা সরাসরি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের তহবিলে যাচ্ছে। এমনকি ভারতকেও রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ‘জরিমানা’ হিসেবে আমেরিকায় রফতানি পণ্যে অতিরিক্ত শুল্কের মুখে পড়তে হয়েছে। সোমবারও ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন— দিল্লি যদি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করে, তবে সেই উচ্চ শুল্ক কার্যকর থাকবে।
এমন প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় জোটের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই ট্রাম্পের কূটনৈতিক চাপের ফলাফল হিসেবে দেখছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাস বলেছেন, “রাশিয়ার আচরণে কোথাও শান্তির ইচ্ছা দেখা যাচ্ছে না।” তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।
অন্যদিকে, ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে তারা গুরুত্ব সহকারে ভাবছে এবং আমেরিকার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও চালিয়ে যাবে। সংক্ষেপে বলা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সিদ্ধান্ত শুধু জ্বালানি নীতি নয়— রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।