করোনা মহামারীর তীব্রতা কমতে শুরু করেছে, মৃতের সংখ্যাও নিম্নমুখী : নিউ ইয়র্কের গভর্নর

মুখ ঢেকে পথে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দারা। (Photo: AFP)

লাশ গোনার প্রহর পার করতে করতে ফুরিয়ে গেছে সে শহরের প্রাণ। সারিসারি মৃত্যুমিছিলের সামনে স্তব্ধ হয়ে গেছে তার কোলাহল। রাতারাতি যেন মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছে সে আলোর শহর। সেখান থেকেই ইতিবাচক বার্তা এল এবার। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের গ্রাফ নাকি নিম্নমুখী হয়েছে সম্প্রতি। সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই দাবি করলেন আমেরিকার নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো।

তিনি জানান, শেষ ২৪ ঘণ্টায় নিউ ইয়র্কে ৫৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২০০ জন। এই পরিস্থিতিকেই অবস্থার উন্নতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে কারণ এই সংখ্যাটা গত কয়েক দিনের তুলনায় বেশ কম। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ১৮ হাজারের বেশি মানুষ নিউ ইয়র্কেই মারা গেছেন। শুধু নিউ ইয়র্ক নগরীতেই মারা গেছেন ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। পুরো আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশজুড়ে নিশ্চিত সংক্রমণের সংখ্যা সাড়ে সাত লাখ পেরিয়ে গেছে।

এই অবস্থায় নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের লকডাউনের মেয়াদ ১৫মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো বলেন, পরিস্থিতি সবে ভালর দিকে মুখ ঘুরিয়েছে। এখনও ততটা উন্নতি হয়নি। এর পরে ধাপে ধাপে ব্যবসা বাণিজ্য খোলা হবে। অবস্থার উন্নতির গ্রাফ এমনই থাকলে ধীরে ধীরে সব উন্মুক্ত করা হবে। সামনের এক মাস পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এক মাস পর পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়াবে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না।


যদিও নিউ ইয়র্কে হাসপাতালগুলিতে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হওয়া রোগী ভর্তির সংখ্যা কমলেও, যারা আসছেন তাঁদের অধিকাংশেরই অবস্থা সংকটজনক। এই বিষয়টিও আবার নতুন এক উদ্বগের জন্ম দিয়েছে। কারণ, হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটগুলো গুরুতর রোগীদের সামাল দিতে পারছে না।

প্রতিদিন শুধু নিউ ইয়র্ক শহরের হাসপাতালেই গড়ে হাজার জন রোগীকে আইসিইউ ইউনিটে পাঠাতে হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক রোগীই বেরিয়ে আসার সুযোগ পাচ্ছেন। ব্রুকলিনের একটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পিয়া ড্যানিয়েল স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টকে এমনটাই বলেছেন। ফলে রোগীর সংখ্যা কমাটা করোনা যুদ্ধ জয়ের ইতিবাচক ইঙ্গিত দিলেও, রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি মোটেও স্বস্তি দিচ্ছে না নিউ ইয়র্ককে।

সেই কারণেই অ্যান্ড্রু কুওমো বলেন, যদিও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীদের উপস্থিতি কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আমাদের সুখের দিনগুলো আবার ফিরে এসেছে। লকডাউন তুলে সবকিছু খুলে দেওয়ার মতো জায়গায় আমরা এখনও পৌঁছতে পারিনি।