২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ফিরছেন তারেক রহমান

দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের নির্বাসন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। মঙ্গলবার নিজেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন তিনি।

লন্ডনে বিজয় দিবস উপলক্ষে ব্রিটেন বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারেক জানান, আগামী ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে হিথ্‌রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি–২০২ বিমানে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। ২৫ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ১২টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর পৌঁছনোর কথা। একই বিমানে তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশে ফিরবেন বিএনপির অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী।
সভামঞ্চ থেকে তারেক বলেন, ‘আজ ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের বিজয় দিবস। বহু বছর আপনাদের সঙ্গে কাটানোর পরে আমি আগামী ২৫ তারিখে দেশে ফিরে যাচ্ছি।’ তাঁর এই ঘোষণার পর সভাস্থলে উপস্থিত দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। তবে তারেক স্পষ্ট অনুরোধ করেন, তাঁর বিদায়ের দিন কেউ যেন বিমানবন্দরে না আসেন। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তারেক বলেন, তথাকথিত ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের পতন কোনও একক রাজনৈতিক দলের কৃতিত্ব নয়। বরং ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, কৃষক, ব্যবসায়ী, নারী-পুরুষ—সর্বস্তরের মানুষের সম্মিলিত লড়াইয়ের ফলেই এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।


উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তারেক রহমান। ২০০৮ সালে মুক্তির পর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে চলে যান তিনি এবং সেখানেই দীর্ঘদিন অবস্থান করেন। চলতি বছরের মে মাসে চিকিৎসার জন্য ব্রিটেনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি দেশে ফিরলেও তখন তারেক ফেরেননি।

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেনেড হামলা মামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি, আয় বহির্ভূত সম্পত্তি-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলা থেকে তারেককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পর থেকেই তাঁর দেশে ফেরার সম্ভাবনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা জোরদার হয়।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে একসঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কারণে বিএনপির একাংশ তারেক রহমানকেই দলের ‘প্রধানমন্ত্রী মুখ’ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। এই প্রেক্ষাপটে তাঁর প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।