ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শাসনকালে ফিরে দেখা এক বছর

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এই এক বছরে তাঁর প্রশাসনের কর্মকাণ্ড ঘিরে মূলত আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বিতর্ক, টানাপোড়েন এবং অনিশ্চয়তার ছবি স্পষ্ট হয়েছে। শুল্কনীতি থেকে শুরু করে বাণিজ্য সম্পর্ক, আবার ব্যক্তিগত মন্তব্য ও আচরণ— সব মিলিয়ে এই সময়কালকে অনেকেই বর্ণনা করছেন ‘শুল্ক, বাণিজ্য আর খামখেয়ালিপনা’র বছর হিসেবে।

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় মেয়াদের শুরু থেকেই শুল্কনীতি নিয়ে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিন, ইউরোপীয় দেশগুলি এবং এমনকি দীর্ঘদিনের মিত্র রাষ্ট্রগুলির বিরুদ্ধেও বাড়তি শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। যদিও ট্রাম্পের সাফাই গেয়ে হোয়াইট হাউসের যুক্তি– এই শুল্কনীতির মাধ্যমে মার্কিন শিল্প ও কর্মসংস্থান রক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু সমালোচকদের মতে, এর ফলে বিশ্ব বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা বেড়েছে এবং সাধারণ উপভোক্তাদের উপর বাড়তি চাপ বেড়েছে।

এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা হয়ে উঠেছে বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বিবেচনা। একাধিক পুরনো চুক্তি থেকে সরে এসে নতুন শর্তে আলোচনা শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রশাসনের দাবি, আগের চুক্তিগুলি আমেরিকার পক্ষে ন্যায্য ছিল না। তবে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এই অবস্থানকে একতরফা বলে আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই নীতির ফলে দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতা কতটা বজায় থাকবে।


শুধু নীতিগত সিদ্ধান্তই নয়, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত মন্তব্য ও আচরণও এই এক বছরে বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর তীব্র ভাষা, বিরোধীদের কটাক্ষ এবং কখনও কখনও আকস্মিক ঘোষণাকে অনেকেই ‘খামখেয়ালি’ বলে বর্ণনা করেছেন। সমর্থকদের একাংশের মতে, এই সোজাসাপ্টা ভাষাই তাঁর শক্তি। আবার বিরোধীদের দাবি, এর ফলে প্রশাসনিক স্থিরতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এক বছর পূর্তিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত, ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর পরিচিত পথেই হাঁটছেন। তাঁর আক্রমণাত্মক সিদ্ধান্ত, স্পষ্ট কিন্তু ভাষা খুবই বিতর্কিত। তাঁর মধ্যে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার প্রবণতা রয়েছে। এখন ট্রাম্পের বাকি মেয়াদে এই শুল্ক ও বাণিজ্যকেন্দ্রিক নীতির ফলাফল শেষ পর্যন্ত আমেরিকা ও বিশ্বের জন্য কী বার্তা বহন করবে, সেদিকেই নজর কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।