আজই শপথ নেবেন সুশীলা কারকি

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে চূড়ান্ত হল অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকির নাম। আজ, শুক্রবারই তিনি শপথ নিতে পারেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে। প্রশ্ন উঠছে, তাঁর নেতৃত্বে অশান্ত নেপালে কি অবশেষে স্থিতাবস্থা ফিরবে? জেন জি প্রজন্মের অভ্যুত্থানে কেপি শর্মা ওলি সরকারের পতনের পর সেনার শাসনে চলছে দেশ। এবার বাংলাদেশের পথ ধরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। সেই সরকারের প্রধান হিসেবে নাম উঠেছিল একাধিক ব্যক্তির। প্রথমে দুই তরুণ নেতার নাম উঠে এসেছিল। এরপরই নতুন চিন্তা মাথায় আসে নেপালের পরিবর্তনপন্থী প্রতিবাদীদের। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে বাছা হয় প্রাক্তন বিচারপতি সুশীলা কারকিকে। পরে আরও একজন নেতার নাম মাথায় এলেও সুশীলা কারকির নামেই সিলমোহর দেন প্রতিবাদীরা।

প্রসঙ্গত, ফেসবুক-সহ একাধিক সমাজমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা, তার সঙ্গে সরকারের অন্দরের ব্যাপক দুর্নীতি— এই দুই কারণে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে নেপাল। রাজপথে নেমে পড়ে ‘জেন জি’ প্রজন্ম। তীব্র চাপে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী ওলি, ইস্তফা দেন বাকি মন্ত্রীরাও। এই শূন্যতার মধ্যে আন্দোলনকারীরাই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু নেতৃত্ব কে দেবেন, সেই প্রশ্নে জল্পনা চলছিল টানা কয়েক দিন।

নতুন সরকারের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে? কে নেপালের রাজনীতিতে স্থিতাবস্থা আনতে পারবেন, তা নিয়ে শুরু হয় জোর চর্চা। প্রথমে কাঠমান্ডুর জনপ্রিয় মেয়র তথা র‍্যাপার বলেন্দ্র শাহের নাম শোনা গিয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা বলেন্দ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে তিনি প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসতে চান না। এর পরেই উঠে আসে সুশীলা কারকির নাম। এর মাঝেই আলোচনায় ছিলেন নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির প্রাক্তন প্রধান কুলমান ঘিসিং। দীর্ঘ বিদ্যুৎ সঙ্কট মেটানোর জন্য তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত সবকটি নাম ছাপিয়ে এগিয়ে গেলেন সুশীলা।


কিন্তু কে এই সুশীলা কারকি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গিয়েছে, নেপালের প্রথম এবং একমাত্র মহিলা প্রধান বিচারপতি ছিলেন কারকি। ভারতের সঙ্গেও তাঁর গভীর যোগ রয়েছে। পড়াশোনা করেছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভারত নিয়ে তাঁর ইতিবাচক মতামত রয়েছে বারবার। অতীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও প্রশংসা করেছেন তিনি। এই সব কারণেই তিনি আন্দোলনকারীদের একাংশের সমর্থন পেলেও, আরেক অংশের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছিল। এমনকি আন্দোলন শিবিরে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির বাসভবনে বৈঠক চলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুশীলা কারকি এবং নেপালের সেনাপ্রধানও। বৈঠকের শেষে তিনিই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসতে রাজি হন বলে সূত্রের খবর। ঠিক হয়েছে, শুক্রবারই শপথ নিতে পারেন সুশীলা কারকি।