জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় এবার সরব হল দক্ষিণ কোরিয়া। এই হামলার কড়া নিন্দা করে ভারত সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিদেশমন্ত্রী চো হিউন। সম্প্রতি ভারত সফরে এসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন হিউন। সেই বৈঠকের পর সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট এবং কঠোর। যে কোনও রকম জঙ্গি হামলার আমরা বিরোধিতা করি। পহেলগামের হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা ভারত সরকার ও ভারতের মানুষের পাশে আছি।’ বিশ্লেষকদের মতে, কোরিয়ার এই কূটনৈতিক বার্তা শুধু সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতার দিকেই ইঙ্গিত করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের অবস্থানকেও শক্তিশালী করছে।
পহেলগামের জঙ্গি হামলার ঘটনার পরে ভারতের তরফে আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়। পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে একাধিক দেশ সফর করে ভারতের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। ওই দলের একটি অংশ সফর করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। সেই সফরের কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘সিওলে আমাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কোরিয়ার আধিকারিকদের বৈঠক অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। হিউন নিজে দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, যা আমাদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কোরিয়ার সরকার যে স্পষ্টভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জনের। গুরুতর আহত হন আরও অনেকে। কেন্দ্রের তরফে এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়। এরপর ৬ মে মধ্যরাতে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে চালানো হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। ওই অভিযানে ধ্বংস করে দেওয়া হয় একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি। টানা চার দিন সীমান্তে সংঘর্ষ চলার পরে ১০ মে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। এই প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ কোরিয়ার এই বার্তা কূটনৈতিক দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি নিয়েও বক্তব্য রেখেছেন হিউন। আমেরিকার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব বাণিজ্যের গতিপথ দ্রুত বদলাচ্ছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছি। আশা করি, ভবিষ্যতে তা দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।’