রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্প-শরিফ বৈঠক, সঙ্গে সেনাপ্রধান মুনির?

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য বৈঠকের খবরে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ চলাকালীনই নাকি এই বৈঠক হতে পারে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, সেই আলোচনায় শরিফের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন সেনাপ্রধান আসিম মুনিরও।

কূটনৈতিক মহল মনে করছে, বৈঠকে মূলত আলোচিত হবে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি, কাতারে ইজরায়েলি হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অচলাবস্থা। সীমান্ত উত্তেজনা নিয়েও স্পষ্ট বার্তা দিতে পারেন ট্রাম্প। যদিও ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস বা পাক সরকার—দু’পক্ষেরই তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান পরবর্তী সময়ে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করা হয়। তারপর থেকেই বিদেশ সফর ও গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পাক সেনাপ্রধানের গুরুত্ব বেড়ে যায়। এর আগে জুন মাসে ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। পরে মুনির প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, সেই সাক্ষাৎ তাঁর কাছে যথেষ্ট ‘সম্মানের’।


জুনের সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো এবং পশ্চিম এশিয়ার বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যোগ দিয়েছিলেন আইএসআই প্রধান আসিম মালিক। তখন ইরান-ইজরায়েল সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছিল। সে সময় ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, প্রয়োজনে পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে পারে আমেরিকা। যদিও পরিস্থিতি সেই পর্যায়ে পৌঁছয়নি। তবে বৈঠকের আগে ‘শান্তি আনার জন্য ট্রাম্পকে নোবেল দেওয়া উচিত’ বলে মুনিরের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছিল।

সম্প্রতি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। জুলাই মাসে আমেরিকা-পাকিস্তান বাণিজ্যিক চুক্তি ঘোষণা হয়। আগস্টে মুনির ফের ওয়াশিংটন সফর করেন। এরপর ইসলামাবাদ জানায়, আমেরিকা তাদের খনিজ ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় চার হাজার কোটি টাকা।

এখন ট্রাম্প-শরিফ-মুনির বৈঠক আদৌ হয় কি না তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে। যদি হয়, তবে সেই আলোচনার অন্দরে কী বার্তা উঠে আসে, তা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার নয়, গোটা বিশ্বের কূটনৈতিক সমীকরণে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।