কিয়েভে ফের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় আতঙ্ক, প্রাণহানি

কিয়েভে রাশিয়ার মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার পর ধ্বংসাবশেষ।

রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কেঁপে উঠল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। ভোরবেলায় আচমকা একের পর এক বিস্ফোরণের আতঙ্কে ঘুম ভাঙে শহরবাসীর। ইউক্রেন প্রশাসন জানিয়েছে, এই হামলায় বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আহতের সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন রুশ বাহিনী আকাশপথে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে দ্রুতগামী ‘শাহেদ’ ধরণের ড্রোন ব্যবহার করেছে। টানা বিস্ফোরণের দাপটে জনবসতি এলাকা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জরুরি পরিষেবার উপর বড়সড় আঘাত লাগে। বহু বাড়িঘরে আগুন লেগে যায়, ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়েন অনেকে।

কিয়েভ নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘নিরীহ নাগরিকরা লক্ষ্যবস্তু হওয়ার মতো নৃশংসতা আর কিছু হতে পারে না। আগুন নেভাতে এবং ধ্বংসস্তূপ সরাতে আমাদের দমকল ও উদ্ধারবাহিনী নিঃসন্দেহে লড়াই করছে।’ আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং রক্তদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।


ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা দপ্তরের দাবি, রুশ বাহিনী আবারও আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিধি লঙ্ঘন করেছে। তারা দাবি করেছে, ‘ইচ্ছে করেই জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলকে লক্ষ্য করা হয়েছে।’ পাল্টা প্রতিরোধের জন্য ইউক্রেন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সেইসঙ্গে বেশ কয়েকটি ড্রোন মাটিতে নামিয়ে আনা হয়েছে বলেও দাবি করেছে তারা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার বহু মাস পেরিয়ে গেলেও এই ধরনের হামলা ইঙ্গিত করছে, আরও অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। শীতের মরসুম চলে আসায় বিদ্যুৎ ও গরম করার ব্যবস্থার উপর আঘাত ইউক্রেনের মানুষের জীবনে নতুন সঙ্কট ডেকে আনতে পারে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার দপ্তর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়ে, সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে যুদ্ধ থামানোর আবেদনও জানানো হয়েছে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, প্রতিবেশী এই দুই দেশের লড়াই আরও দীর্ঘায়িত হতে চলেছে।

কিয়েভের রাস্তায় ধোঁয়া, অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন আর মানুষের চিৎকার— এই মুহূর্তে এটাই যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরের নির্মম বাস্তবতা।