ইউক্রেনে রাতভর ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রাশিয়ার, মৃত ১৩

ফাইল ফটো

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে বড় দাবি করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে অতি শীঘ্রই শান্তি আলোচনায় বসতে চলেছে।’ যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত থামার কোনও লক্ষণ নেই। শুক্রবারের পর শনিবারও রাতভর ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। মোট ৩৬৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়েছে বলে খবর। তিন শিশু-সহ মোট ১৩ জন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছে বলে খবর।

কিভের দাবি, ইউক্রেনের ডিফেন্স সিস্টেম ৬টি মিসাইল ও ২৪৫টি মিসাইলকে প্রতিহত করে দিয়েছে। কিভ, খারকিভ, মাইকোলাইভ, তেরনোপিলের মতো শহরগুলিতে আক্রমণ চালানো হয়। ইউক্রেনের এই শহরগুলিতে একাধিক আবাসন, পরিকাঠামো গুঁড়িয়ে গিয়েছে।  যুদ্ধ চলাকালীন আকাশপথে এটাই সবথেকে বড় আক্রমণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতির চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক অবশ্য রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘মস্কো যতক্ষণ অস্ত্র তৈরি করার ক্ষমতা রাখে, ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই করবে।’

ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘প্রতি রাতে, আমাদের বাহিনী জীবনরক্ষার জন্য কাজ করে। আজও একটি বিরাট এবং জঘন্য রুশ আক্রমণ হয়েছে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলির কয়েকটি সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে।’ পুতিনকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘পুতিন যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এতে তাঁর কোনও লাভ হচ্ছে না। কেবল রোজ মানুষ মরছে। আর তাই রোজই রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করার নতুন নতুন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।’


আমেরিকাকেও একহাত নেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জেলেনেস্কি টেলিগ্রামে লিখেছেন, ‘আমেরিকার এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের নীরবতা কেবল পুতিনকে উৎসাহিত করে চলেছে। এই ধরনের একেকটি হামলার জন্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার জারি হোক।’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। টানা তিন বছরে বার বার যুদ্ধ থামানোর একাধিক চেষ্টা হয়েছে। সরাসরি আলোচনাতেও বসেছেন দুই দেশের কর্তারা। কিন্তু কেউই যুদ্ধের পথ থেকে সরে আসেনি। হামলা পাল্টা হামলায় একে অপরকে রক্তাক্ত করছে রাশিয়া-ইউক্রেন। প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ মানুষ। দু’দেশের সংঘাতের বলি নিষ্পাপ শিশুরাও।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পর শুরু থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যেমন চাপ দিয়েছেন, তেমনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকেও প্রচণ্ড চাপে রেখেছেন ট্রাম্প। এমনকী যুদ্ধ শুরু করা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে দুষতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

দুই দেশকে যুদ্ধ-বিবাদ থামিয়ে আপোস মীমাংসার দিকে এগোনোর পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। এই শর্ত না মানলে পাল্টা তাঁদের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক বা অর্থনৈতিক অসহযোগিতারও প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের সেই উদ্যোগে অনেকটাই কাজ হয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। দুই দেশ পরস্পর বোঝাপড়ার লক্ষ্যে তিন বছরের মাথায় প্রথমবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছে ইস্তানবুলে। শীঘ্রই দুই দেশ ফের বৈঠকে বসবে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প।