ট্রাম্পের ভাষণের মাঝেই প্যালেস্তাইনের স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ, চ্যাংদোলা করে পার্লামেন্ট থেকে বার করা হল দুই সদস্যকে

ইজরায়েলের পার্লামেন্টে ঘটে গেল অঘটন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তৃতা চলাকালীন প্ল্যাকার্ড হাতে ট্রাম্প বিরোধী স্লোগান দেন দুই সদস্য। পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আগে তাঁদের চ্যাংদোলা করে ‘নেসেট’ থেকে বের করে দেওয়া হয়।

সোমবার ইজরায়েল পৌঁছোন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইজরায়েলের আইনসভা ‘নেসেট’-এ বক্তৃতা দিতে শুরু করেন তিনি। সেই সময় আচমকা দুই সদস্য উঠে দাঁড়িয়ে প্ল্যাকার্ড নিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন ওই দুই বামপন্থী সদস্য।

আয়মেন ওদেহ এবং ওফের কাসিফ নামে দুই বামপন্থী সদস্য প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান। এরপর তাঁদের টেনেহিঁচড়ে ‘নেসেট’ থেকে বার করে দেওয়া হয়! পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার বক্তৃতা শুরু করেন ট্রাম্প। ‘নেসেট’-র নিরাপত্তারক্ষীদের ‘দক্ষতা’র প্রশংসা করেন তিনি।


শান্তিপ্রস্তাবের মাধ্যমে গাজায় সংঘাত থামানোর দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর এই কৃতিত্বকে মান্যতা দেয় ইজরায়েল। সোমবার ইজরায়েলে ট্রাম্প পৌঁছোনোর আগেই দু’দফায় ২০ জন জীবিত ইজ়রায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। শুধু ইজরায়েল নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ গাজায় যুদ্ধ বন্ধের কৃতিত্ব দিয়েছে ট্রাম্পকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও যুদ্ধ থামানো নিয়ে ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এদিন ইজরায়েলে পা রাখতেই ট্রাম্পের উদ্দেশে ‘জয়ধ্বনি’  শুরু হয়। তেল আভিভে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামে সাধারণ মানুষ ‘জয়ধ্বনি’  দিতে থাকে। যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি ফেরানোর জন্য ট্রাম্পের পদক্ষেপকে ইজরায়েলের বাসিন্দাদের একাংশ কুর্নিশ জানিয়েছেন। তাঁকে ‘নেসেট’-এ ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

ইজরায়েলে যাওয়ার আগেই ট্রাম্প ঘোষণা করেন গাজায় যুদ্ধ শেষ। পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফিরবে বলেও তিনি দাবি করেন। ‘নেসেট’-এও সেই একই কথার প্রতিধ্বনি শোনা যায় ট্রাম্পের কণ্ঠে। ইজরায়েলের আইনসভায় সকল সদস্য উঠে দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান।

এরপর নেতানিয়াহু ট্রাম্পের প্রশস্তি করেন। আগামী বছর  মার্কিন প্রেসিডেন্ট যাতে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান, সে নিয়ে গোটা বিশ্বে ইজরায়েল দৌত্য চালাবে বলে জানান নেতানিয়াহু। ট্রাম্পকে ইজরায়েলের সর্বোচ্চ পুরস্কার প্রদানের প্রস্তাবও দেন। শান্তিপ্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে সোনার পায়রা তুলে দেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

গাজায় শান্তিপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক ভোর’ বলে ব্যাখ্যা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘এখন আকাশ শান্ত। বন্দুকের আওয়াজ থেমে গিয়েছে। পবিত্র ভূমিতে শান্তি এসেছে।‘ তবে এদিন ট্রাম্পের বক্তৃতা মসৃণ ছিল না।

দুই বামপন্থী সদস্যের বিক্ষোভে সাময়িকভাবে থমকে যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষণ। প্যালেস্টাইনের স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। টেনেহিঁচড়ে ওই দুই বিক্ষোভকারীদের তুলে ইজরায়েলের আইনসভার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা ঘটনার জন্য ট্রাম্পের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন আইনসভার স্পিকার আমির ওহানা। তার পরে আবার বক্তৃতা শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।