তুরস্কে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল লিবিয়ার সেনাপ্রধান মহম্মদ আলি আহমেদ আল-হাদ্দাদের। মঙ্গলবার রাতে (স্থানীয় সময়) তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আল-হাদ্দাদের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন লিবিয়ার আরও চার জন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্তা এবং তিন জন বিমানকর্মী। ঘটনায় শোকস্তব্ধ লিবিয়া ও আন্তর্জাতিক মহল।
সংবাদসংস্থা এপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে আঙ্কারার এসেনবোগা বিমানবন্দর থেকে দাসোঁ ফ্যালকন ৫০ বিজনেস জেটে লিবিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান ও তাঁর সফরসঙ্গীরা। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বিমানটি উড্ডয়ন করে। কিন্তু ওড়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। রাত আনুমানিক ৮টা ৪০ মিনিটে পাইলট তুরস্কের হাইমানা এলাকার কাছে জরুরি অবতরণের অনুমতি চেয়ে কন্ট্রোল রুমে বার্তা পাঠান। তার পরেই বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং রেডার থেকেও সেটি অদৃশ্য হয়ে যায়।
তুরস্ক সরকার জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিতে সরকারি সফরে আঙ্কারায় গিয়েছিলেন লিবিয়ার সেনাপ্রধান। সফর শেষে দেশে ফেরার পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তদন্তে নাশকতার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তুরস্ক প্রশাসন। দুর্ঘটনার পর রাজধানী আঙ্কারা থেকে প্রায় ৭৪ কিলোমিটার দূরে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়।
দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছেন লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আব্দুল-হামিদ দবেইবা। তিনি এই ঘটনাকে ‘একটি বড় বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করে বলেন, আল-হাদ্দাদের মৃত্যু লিবিয়ার সেনাবাহিনী, রাষ্ট্র এবং জনগণের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। নিহত অন্য সামরিক কর্তাদের মধ্যে রয়েছেন স্থলবাহিনীর প্রধান আল-ফিতুরি ঘারিবিল, সামরিক উৎপাদন দপ্তরের ডিরেক্টর মাহমুদ আল-কাতাওয়ি, সেনাপ্রধানের উপদেষ্টা মহম্মদ আল-আসাওয়ি দিয়াব এবং সামরিক দপ্তরের চিত্রগ্রাহক মহম্মদ ওমর আহমেদ মাহজুব।
উল্লেখ্য, পশ্চিম লিবিয়ায় অত্যন্ত প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় ছিলেন আল-হাদ্দাদ। মুয়াম্মর গদ্দাফি-বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা এই সেনানায়ক ২০২০ সাল থেকে লিবিয়ার সেনাপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। বিভক্ত লিবীয় সশস্ত্র বাহিনীকে একত্রিত করতে রাষ্ট্রপুঞ্জের সমর্থিত উদ্যোগেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন।