যুদ্ধের আবহে পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস, বন্ধ বেচা-কেনা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

পহেলগামের প্রত্যাঘাত হিসেবে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জেরে পাকিস্তানের শেয়ার বাজারে রক্তক্ষরণ হয়েই চলেছে। বুধবারের পর বৃহস্পতিবারেও ব্যাপক ধস নেমেছে সেখানকার সূচকে। করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ বা কেএসই-১০০ সূচক একদিনে ৬,৯৪৮.৭৩ পয়েন্ট পড়েছে। ৬.৩২% নিম্নগামী হওয়ার ফলে বৃহস্পতিবার শেয়ার সূচক নেমে দাঁড়িয়েছে ১,০৩,০৬০.৩০ পয়েন্টে। গত কয়েকদিন ধারাবাহিক এই পতনের জেরে বন্ধ করে দেওয়া হয় শেয়ার কেনা-বেচা। বৃহস্পতিবার সাময়িকভাবে ট্রেডিং বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্ত নেয় করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ।

প্রসঙ্গত পহেলগাম হামলার ১৫দিন পর প্রত্যাঘাত হানল ভারত। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অভিযান শুরু হয় মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে। ওইদিন রাতেই মাত্র ২৫ মিনিটে ২৪টি মিসাইল হামলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। সেই অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে। কারণ, ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই যোগ্য প্রত্যাঘাতের পরেই আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে পুনঃপ্রত্যাঘাতের ছক কষে পাক সেনাবাহিনী। বুধবার গভীর রাতেই বেশ কয়েকটি সেনা ছাউনি সহ ভারতের ১৫টি শহর উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে পাক হানাদার বাহিনী। কিন্তু সমস্ত পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের রেডার ধ্বংস করে তাদের ডিফেন্স সিস্টেমকেই নষ্ট করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা বিভাগ। এরপরই ভারত সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে। আর তার জেরে ব্যাপকভাবে ধসে গিয়েছে সেখানকার শেয়ার সূচক।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ ও নিরস্ত্র ভারতীয় পর্যটক নিহত হয়। তার জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালায়। সেই প্রত্যাঘাতের জেরে পাকিস্তানের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে গিয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। ফলে নজিরবিহীনভাবে নেমে গিয়েছে সূচক। কার্যত সিঁদুরে মেঘ দেখছে পাক বিনিয়োগকারীরা।


শেয়ার বাজারে এই ধসের মধ্যে পাকিস্তানের আর্থিক কাঠামোর দুর্বলতা ও আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমবর্ধমান চাপের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। কারণ বিশেষজ্ঞদের ধারনা, এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সরকারের উপর আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের উপরে ক্রমশ চাপ বাড়ছে। সেদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আগামীতে অনেক কঠিন সময় পার করতে হতে পারে। কারণ পাক সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সেখানকার শেয়ার বাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।