ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পাকিস্তান, ১২৭ কোটি টাকার লোকসান

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ রেখে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আকাশপথ ব্যবহার বাবদ রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে প্রায় ১২৭ কোটি টাকার। পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য সামনে এসেছে।

পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে পাল্টা কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা করে ভারত। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের সমস্ত বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। ফলে ভারতীয় বিমানগুলিকে পশ্চিম এশিয়া ও ইউরোপগামী পথে অনেকটা ঘুরপথে যাত্রা করতে হচ্ছে, যার ফলে বাড়ছে জ্বালানি খরচ ও যাত্রার সময়।

একটি দেশের বিমান অন্য দেশের আকাশপথ ব্যবহার করলে, সংশ্লিষ্ট দেশটি ওভারফ্লাই ফি বাবদ রাজস্ব আয় করে থাকে। পাকিস্তানের মতো আর্থিক সঙ্কটে ভোগা দেশের ক্ষেত্রে এই রাজস্ব আয় গুরুত্বপূর্ণ। তবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিষয়টিকে ‘আর্থিক ক্ষতি’ হিসেবে মানতে নারাজ। মন্ত্রকের বক্তব্য, এটি বরং কম রাজস্ব আদায় হিসাবে গণ্য হওয়া উচিত। পাশাপাশি, তারা জানিয়েছে, অর্থনৈতিক লাভের চেয়েও জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব অগ্রাধিকার পাওয়াই যুক্তিযুক্ত।


উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের পরও ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করেছিল পাকিস্তান। সেই সময় তাদের লোকসান হয়েছিল প্রায় ২৩৫ কোটি টাকার। পরে অবশ্য চাপের মুখে ফের আকাশসীমা খুলে দিতে বাধ্য হয় ইসলামাবাদ।
এই মুহূর্তে ভারতও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পাকিস্তানের বিমানগুলোর জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের সময়সীমা ২৩ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছে। পাক সংবাদমাধ্যমের মতে, আগস্টের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ভারতের বিমান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখবে পাকিস্তানও।

উভয় দেশের এই পারস্পরিক নিষেধাজ্ঞার ফলে শুধুমাত্র আর্থিক ক্ষতি নয়, আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবায় বিঘ্ন এবং যাত্রীদের অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয়ের সমস্যাও বাড়ছে। তবে আগস্টের শেষে দুই দেশ আকাশসীমা খোলার বিষয়ে কোনও যৌথ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় কি না, সেটাই এখন দেখার।