সাহিত্যে নোবেল পেলেন হাঙ্গেরির লাজলো ক্রাজনাহোরকাই

২০২৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হাঙ্গেরির সাহিত্যিক লাজলো ক্রাজনাহোরকাই। সুইডেনের স্টকহোমের সুইডিশ অ্যাকাডেমি থেকে নোবেল কমিটি এই বছরের নোবেলপ্রাপক হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছে। নোবেল কমিটি তাদের বিবৃতিতে বলেছে যে, পৃথিবীজুড়ে সন্ত্রাসের ভয়াবহ আবহের মধ্যে শিল্পের শক্তিকে স্বমহিমায় স্থাপন করেছেন তিনি। রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি, ৭১ বছর বয়সি এই সাহিত্যিককে ‘দূরদর্শী’ এবং ‘মনমুগ্ধকর’ সাহিত্যস্রষ্টা হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

লাজলো ক্রাজনাহোরকাই দক্ষিণপূর্ব হাঙ্গেরির একটি ছোট শহর জুলাহতে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৪ সালে। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর উপন্যাস ‘স্যাটানট্যাঙ্গো’ যাতে তিনি হাঙ্গেরির একটি খামারের, গ্রাম্য জীবনের দারিদ্রে অন্ধকারাচ্ছন্ন অথচ স্বপ্নসম এক বিবরণ দিয়েছেন।

১৯৮৯ সালে প্রকাশিত ‘দ্য মেলানকলি অফ রেজিস্ট্যান্স’-এর মত সাহিত্যকর্মে তাঁর নিজস্ব লিখনশৈলীর দক্ষতা প্রকাশিত হয়েছে। ক্রাজনাহোরকাই তাঁর সাহিত্যে অতি দীর্ঘ বাক্য ব্যবহার করেন যার মধ্যে দিয়ে তিনি মানুষের জীবনের নিরলসতাকে তুলে ধরতে চান। তাঁর বাক্য ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে এক অদ্ভুত বহমানতা যা মানুষের জীবনযাপনের ধারাকে নানান আঙ্গিকে প্রকাশ করে।


‘হার্শট ০৭৭৬৯’ উপন্যাসের কথা নোবেল কমিটি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। এই উপন্যাসটিকে হাঙ্গেরির একটি নির্ভুল সামাজিক দলিল বলা যেতে পারে। এছাড়াও এই সাহিত্যিকের বিশেষ কিছু সাহিত্যকর্ম, যেমন ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ (১৯৯৯), ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহেইমস হোমকামিং’ (২০১৯) ইত্যাদি বিশ্বসাহিত্যের আঙিনায় বিশেষভাবে জায়গা করে নিয়েছে।

এছাড়াও ‘পাথস টু দ্য ওয়েস্ট’, ‘এ মাউন্টেন টু দ্য নর্থ’, ‘আ লেক টু দ্য সাউথ’ এবং ‘এ রিভার টু দ্য ইস্ট’ ক্রাজনাহোরকাইয়ের কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ। ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ১৭টি গল্পের সংকলন ‘সিয়োবো দেয়ার বিলো’। ২০১৮ সালে তাঁর ছোট ছোট কিছু লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘স্পেডওয়ার্ক ফর আ প্যালেস’ যেগুলির মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায় ক্রাজনাহোরকাইয়ের লেখনীর বৈচিত্র্য, দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গুরুগম্ভীর বিষয়ে হাস্যরসের ব্যবহার।

লাজলো ক্রাজনাহোরকাই ২০১৫ সালে ম্যান বুকার আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলেন। বুকার কমিটিও তাদের বিবৃতিতে ক্রাজনাহোরকাইয়ের বাক্য ব্যবহারের মুন্সিয়ানার প্রশংসা করে। তাঁর লেখার ইংরাজি অনুবাদক কবি জুর্জ সার্তেস বলেছেন, ‘ক্রাজনাহোরকাইয়ের লেখা আপনাকে ততক্ষণ পর্যন্ত আকর্ষণ করতে থাকবে যতক্ষণ না তাঁর লেখনীর জগৎ আপনার নিজস্ব জগৎ হয়ে উঠছে।‘