৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমেরিকা প্রদত্ত দুই বিমান উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেপালের সদ্যপ্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী আরজু রানা দেউবা। সেখানে তিনি অতিথিদের সঙ্গে খোশমেজাজে মেলামেশা করছিলেন এবং আমেরিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন।
কিন্তু মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানের মধ্যে সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেল চরম অস্বাভাবিক দৃশ্যে। মঙ্গলবার বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় আরজু এবং তাঁর স্বামী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার রক্তাক্ত অবস্থার ভিডিও ও ছবি ধরা পড়ে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ৪০ সেকেন্ডের ভিডিয়োতে দেখা যায়, দম্পতিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় পোশাকে রক্তের ছোপ, সেই সঙ্গে একটি ভবনে আগুন ও ধোঁয়ার দৃশ্য।
জানা গিয়েছে, বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় ছাত্র-যুব আন্দোলনের কারণে। সোমবার থেকে সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন, যেখানে ১৯ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন। ছাত্র-যুবদের জোরালো আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার সোমবার রাতেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। কিন্তু তাতেও সহিংসতা থামেনি। মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে জনগণ একের পর এক নেতাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে শুরু করে।
এই অশান্তির মাঝেই প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। এরপর সেনাবাহিনী নেপালের জাতীয় সচিবালয় থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত দখল করে নেয়। রাস্তায় শুরু হয়েছে টহলদারি। সেনারা দেশের শাসন পরিচালনার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে দেশজুড়ে কার্ফু জারি করা হয়েছে।
আর আরজু রানা দেউবা ও তাঁর পরিবারের আনন্দ ও স্বস্তি মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে এক মর্মান্তিক রক্তাক্ত দৃশ্যে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগামী দিনে দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি কীভাবে ফিরে আসে সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।