ট্রাম্পের ফোন ধরলেন না মোদি!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সেই কল ধরতে রাজি হননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জার্মান দৈনিক ‘ফ্রাঙ্কফুর্টার আলগেমাইন জাইতুং’–এর দাবি মেনে এবার একই সুরে রিপোর্ট করল মার্কিন দৈনিক ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, গত জুনে শেষবার মোদি-ট্রাম্পের কথা হয়েছিল। তার পর থেকে ট্রাম্প অন্তত চারবার ফোন করার চেষ্টা করলেও ভারতের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি, একাধিক অমীমাংসিত বাণিজ্য সংক্রান্ত ইস্যু এবং ভারতীয় পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক বসানো নিয়েই মূলত মোদীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছিল হোয়াইট হাউস। কিন্তু দিল্লির অবস্থান ছিল একেবারেই ঠান্ডা। ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ট্রাম্প বারবার ফোনে আলাপের সুযোগ চাইলেও তাতে সাড়া দেওয়া হয়নি।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের এই অচলাবস্থার সূত্রপাত গত মে মাসে, জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাক সংঘাতকে ঘিরে। সেই সংঘাত থামাতে তার ভূমিকার দাবি করেন ট্রাম্প। এমনকি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘যুদ্ধবিরতি আনার কৃতিত্ব’ দাবি করেন। দিল্লি তা সরাসরি নস্যাৎ করে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ভারত-পাকের সীমান্ত সংঘাত শুধুই দুই দেশের বিষয়, সেখানে বাইরের কারও ভূমিকা নেই।


জুনের ১৭ তারিখে শেষ ফোনালাপে ট্রাম্প এমনকি মোদীকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম প্রস্তাব করার পরামর্শ দেন বলেও দাবি করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। কিন্তু মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সংঘাত নিয়ন্ত্রণে আনা ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ফল, মার্কিন হস্তক্ষেপ নয়।

এর পর থেকেই বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। আমেরিকা ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক চাপানোর পর রুশ তেল কেনার অভিযোগে আবারও ২৫ শতাংশ জরিমানা শুল্ক চাপিয়েছে। ফলে ভারতের জন্য মার্কিন বাজারে কার্যত ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা বয়ে নিয়ে যাওয়া এখন অবধারিত হয়ে উঠেছে।

কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, দিল্লির অনমনীয় অবস্থানের অন্যতম কারণ ট্রাম্পের অনিয়ন্ত্রিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার। তাঁরা মনে করছেন, ফোনালাপে যা আলোচনা হয়, তা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে প্রকাশ্যে এনে কূটনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারেন ট্রাম্প। ফলে আপাতত চুপ থাকার কৌশলই বেছে নিয়েছে ভারত।