প্রবল বর্ষণের জেরে হড়পা বানে বিপর্যস্ত পাকিস্তান। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩২১ জনের, নিখোঁজ শতাধিক। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বুনার জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু ওই জেলাতেই মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৫০ জনের। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাত ও তার ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে। শুক্রবার একদিনেই প্রাণ হারান অন্তত ২৫০ জন। হড়পা বান ও ধসে খাইবার পাখতুনখাওয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২৫০ জন।
এছাড়াও, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ৯ জন এবং গিলগিট-বালতিস্তানে মারা গিয়েছেন আরও ৫ জন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে গিয়ে আরও এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে বাজাউর এলাকায়। শুক্রবার খারাপ আবহাওয়ার কারণে একটি ত্রাণবাহী হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় দুই পাইলট সহ প্রাণ হারান মোট পাঁচ জন।
হড়পা বানে বহু বাড়ি, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং রাস্তা ধ্বংস হয়েছে। কারাকোরাম ও বালতিস্তান যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ একাধিক স্থানে অবরুদ্ধ। এসব অঞ্চলে যাতায়াত সীমিত রাখতে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জনগণকে সতর্ক থাকার ও প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, খাইবার পাখতুনখাওয়ায় আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত মাঝেমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষর দেওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বর্ষা মৌসুমে—২৬ জুন থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০৭ জন। নিহতদের মধ্যে ১৫৯ জনই শিশু। দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করেছে প্রশাসন, তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিঘ্নে কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।