কোনও ভুল করবেন না, কোভিড ১৯ কিন্তু আমাদের সঙ্গে অনেক দিন থাকবে : হু প্রধান

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)'র ডিরেক্টর টেড্রস আধানম। (Photo by Fabrice COFFRINI / AFP)

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ খুব শিগগিরই থামবে না। বরং তা এখনও অনেক দিন ভোগাতে পারে বলে বুধবার গোটা দুনিয়ার মানুষকে সতর্ক করতে চাইলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)’র ডিরেক্টর টেড্রস আধানম। তাঁর কথায়, পৃথিবীর বহু দেশই এখনও সংক্রমণ মোকাবিলার প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। তাই কোনও ভুল করবেন না। এই ভাইরাস এখনও অনেক দিন আমাদের সঙ্গে থাকবে।

এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে হু প্রধান আরও বলেন, কিছু দেশ ভাবতে শুরু করেছিল যে তারা সংক্রমণের বিপদ বুঝি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। কিন্তু সেখানে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। আবার আফ্রিকা ও আমেরিকায় সংক্রমণ যে হারে ছড়াচ্ছে তা খুবই উদ্বগজনক।

শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নয়, গোটা দুনিয়ার প্রথিতযশা সব বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতই হল, এখন সংক্রমণকে কেবল ঠেকা দিয়ে রাখা হচ্ছে। ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি সুনিশ্চিত ভাবে কাজ করছে তা প্রমাণ করা যায়নি।


ভ্যাকসিনের ট্রায়াল কয়েকটি সংস্থা শুরু করেছে, বৃহস্পতিবার থেকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করবে। মানুষের শরীরে তা কতটা কাজ করছে পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু সেই ভ্যাকসিন আদৌ কার্যকরী হবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। আবার ভ্যাকসিন কার্যকরী প্রমাণিত হলেও গোটা পৃথিবীর মানুষকে টিকা দিতে কয়েকশ কোটি ভ্যাকসিন লাগবে। তা উৎপাদন কতদিনে হবে তাও অনিশ্চিত।

বুধবার ভারতীয় সময়ের রাত সাড়ে ৯’টা নাগাদ টেড্রস সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, হু ঠিক সময়েই জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেছিল। তার ফলে প্রতিটি দেশই প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার সময় পেয়েছে। যদিও টেড্রস যেভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র প্রশংসা করেছে তা নিয়ে অবশ্য সবাই এক মত নন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কে পৃথিবীর সব দেশকে সচেতন করতে হু দেরি করেছে বলে মত অনেকের। মার্কিন প্রশাসন তো পরিষ্কারই জানিয়েছে যে হু-ই বিভ্রান্ত করেছে। চিনের সংক্রমণকে লঘু করে দেখিয়েছে। এ কথা বলে হু-র জন্য অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। আবার খোদ হু প্রধানের সমালোচনা করেছে জাপান। টেড্রসকে হু প্রধানের পদ থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছে এশিয়ার এই দেশ।

তবে টেড্রস এদিন বলেছেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ট্রেন্ড নিম্নগামী। নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমছে। তবে আফ্রিকা এবং মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা আর পূর্ব ইউরোপে সংক্রমণ ছড়ানোর গতিপ্রকৃতি এখনও উজ্জ্বগজনক। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গোটা পৃথিবী জুড়ে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা পচিশ লক্ষেরও বেশি।

এ দিন টেড্রসকেও প্রশ্ন করা হয় যে, হু-র কি পরিস্থিতি বিবেচনা করতে ভুল হয়েছিল? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কি দেরি করে ফেলেছিল? জবাবে তিনি বলেন, আমি ভেবে দেখেছি, কোনও দেরি হয়নি। ৩০ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল।