ইসলামাবাদের মিথ্যার বেসাতির পর্দা ফাঁস। জঙ্গি সংগঠনগুলির স্বীকারোক্তি ভেস্তে দিল ইসলামাবাদের মিথ্যা প্রচার। পাকিস্তানের মাটিতে চলছে জঙ্গি শিবিরের প্রশিক্ষণ। ৭ মে ভারতীয় সেনা অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় জঙ্গি ঘাঁটি। সেই কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিল জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই তৈবা।
সম্প্রতি জইশ-ই-মহম্মদের কমান্ডার মাসুদ আজহারের পরিবারের ক্ষয়ক্ষতির কথা প্রকাশ করেছিলেন। এবার লস্কর-ই-তৈবার এক শীর্ষ কমান্ডার অপারেশন সিঁদুরের ফলে মারকাজ তইবা এবং মুরিদকে ধ্বংসের কথা স্বীকার করে নিলেন। এলইটি কমান্ডার কাসিমের একটি ভিডিও সামাজি মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘দৈনিক স্টেটসম্যান’। তবে ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কাসিম ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখান থেকে তিনি বলছেন, ‘আমি মুরিদকের মারকাজ তৈবার ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। যেটি ভারতের আক্রমণে ধ্বংস হয়েছিল। আল্লাহর কৃপায় এখন এখানে আরও বড় আকারে নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে। এই মসজিদ ও ঘাঁটি আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হবে।’ এই মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে শোরগোল। পাকিস্তানের বহু বছরের রাজনৈতিক অবস্থানকে কার্যত প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
এদিকে অন্য একটি ভিডিয়োতে কাসিম পাকিস্তানের তরুণদের মুরিদকে এসে “দাওরা-এ-সুফফা” নামে পরিচিত সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এই প্রশিক্ষণে ধর্মীয় প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি মৌলিক অস্ত্র প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে ভারতীয় বিমান আইসি-৮১৪ অপহরণের পর মাসুদ আজহার মুক্তি পায়। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই বাহাওয়ালপুর জইশ মহম্মদের প্রধান ঘাঁটিতে পরিণত হয়। আর সেই ঘাঁটিই ধ্বংস করেছে ভারতীয় সেনার মিসাইল হামলা।
প্রসঙ্গত, পহেলগামে জঙ্গি হামলায় নিহত হয় ২৫ জন পর্যটক-সহ কাশ্মীরের এক স্থানীয় বাসিন্দা। ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতীয় সেনা পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানায়। জইশের ঘাঁটি বাহাওয়ালপুর এবং একাধিক লস্কর প্রশিক্ষণকেন্দ্র তার মধ্যে পড়ে বলে খবর। এই ঘটনা পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিগুলির ভিত নাড়িয়ে দেয়।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, লস্কর নীরবে তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত সদর দপ্তর পুননির্মাণ করছে। ২০২৬-এর ৫ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীর সংহতি দিবস। সেই দিন নতুন কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করার লক্ষ্য নিয়ে তারা এগোচ্ছে বলে খবর। দিনটিকে কেন্দ্র করে বড় সম্মেলনের পরিকল্পনাও নিয়েছে লস্কর।
পাকিস্তান বার বার বিশ্বমঞ্চে জঙ্গি শিবিরের কথা অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে, জঙ্গি শিবিরের মাথারা ধ্বংসের ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করছে। ইসলামাবাদের এই দ্বিচারিতা কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তুলছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।