‘গাজা দখল করব না’, অন্য পরিকল্পনার কথা নেতানিয়াহুর মুখে

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

গাজা ভূখণ্ড দখলের ইঙ্গিত দেওয়ার পর আচমকাই সুর বদল করলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শনিবার এক্স-এ পোস্ট করে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘আমরা গাজা দখল করব না।’ এই ঘোষণার পর নতুন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। নেতানিয়াহুর এই অবস্থান বদলের পিছনে মার্কিন চাপ, আন্তর্জাতিক সমালোচনা না কি কূটনৈতিক হিসাবনিকাশ – তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা।

সম্প্রতি ইজরায়েলের নিরাপত্তা ও রাজনীতি বিষয়ক মন্ত্রিসভায় নেতানিয়াহুর প্রস্তাবেই গাজা দখলের পরিকল্পনায় ছাড়পত্র মিলেছিল। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার বৈঠকের শেষে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) উত্তর গাজা থেকে সাধারণ নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পরে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানায়, গাজা ভূখণ্ডের প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে।

তবে হঠাৎই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর গাজা দখল থেকে পিছিয়ে আসা এবং নতুন পরিকল্পনার ঘোষণায় পরিস্থিতির মোড় ঘোরে। এক্স পোস্টে তিনি জানান, হামাসের হাত থেকে গাজাকে মুক্ত করাই এখন তাঁদের মূল লক্ষ্য। তাঁর কথায়, ‘আমরা চাই গাজা-য় একটি শান্তিপূর্ণ, বেসামরিক প্রশাসন গড়ে উঠুক। সেই প্রশাসন হবে হামাস ও প্যালেস্টাইন অথরিটি – উভয়েই মুক্ত।’


নেতানিয়াহু আরও দাবি করেন, এই পরিকল্পনা কার্যকর হলে পণবন্দিদের মুক্তি ত্বরান্বিত হবে এবং ভবিষ্যতে গাজা আর ইজরায়েলের জন্য হুমকির কারণ হয়ে উঠবে না। যদিও এর আগেই তিনি একাধিকবার প্রকাশ্যে গাজা দখলের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। এমনকি, বৃহস্পতিবারই তাঁর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গাজার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তাব মঞ্জুর করেছিল।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে গাজা অবরোধ করে রেখেছে ইজরায়েলি বাহিনী। বন্ধ রয়েছে খাদ্য ও বাণিজ্যিক পণ্যের সরবরাহ। ফলে সেখানে ভয়াবহ মানবিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টির প্রকোপ দেখা দিয়েছে, বহু মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছেন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পরে কিছুটা ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও, তা যে পর্যাপ্ত নয় – সেই অভিযোগও উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। নেতানিয়াহুর নতুন পরিকল্পনা বাস্তবে কতটা ফলপ্রসূ হবে এবং গাজা পরিস্থিতি আদৌ শান্তির দিকে এগোবে কি না – এখন সেটাই দেখার।