ইউনূসের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উগ্র ইসলামিক জিহাদি সংগঠনগুলিকে মদত দিচ্ছেন ইউনূস। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালিসিক গ্রুপ বা আরআরএজি।  বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রতিবাদ পত্র প্রকাশ করেছে এই সংস্থা। মঙ্গলবার ইউনূসের নিন্দা করে আরআরএজি’র পরিচালক সুহাস চাকমা বলেন,  সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগকে লাগামহীনভাবে ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা।

গত ২৩ অক্টোবর, ইউনূস সরকারের সমর্থনে কয়েকটি ইসলামপন্থী সংগঠন যৌথভাবে ঢাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বলে অভিযোগ করেছে আরআরএজি। বিক্ষোভ থেকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানানো হয়। এমনকী ইস্কন সদস্যদের ‘ভারতের এজেন্ট’ আখ্যা দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশ থেকে বিতাড়নের দাবিও তোলা হয়।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের একটি রিপোর্ট পেশ করেছে ‘বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।‘ তাতে মোট ২ হাজার  ৪৪২টি নির্যাতনের ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। ‘রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ’ তাদের রিপোর্টে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ‘অরাজক’ পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরেছে।  গত ২৩ অক্টোবর একাধিক ইসলামপন্থী গোষ্ঠী বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায়। ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়। হেফাজত ইসলামের তরফে সংখ্যলঘু নির্যাতনের উসকানি দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়। দেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়।


সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় এবার সেনাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর সেনাবাহিনী খাগড়াছড়ি জেলার বর্মাচরিতে আর্য্য কীর্তি বৌদ্ধ বিহারের জমি জোর করে দখল করে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থায়ী সেনা শিবির বানানোর চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ।

২৮ অক্টোবর একই জেলার গুইমারা এলাকায় এক কিশোরীকে  গণধর্ষণ করা হয়। তিন জন যুবক প্রতিবাদ দেখালে সেনাবাহিনী তাঁদের গুলি করে হত্যা করে! গত ৫ মে উপজাতি এলাকায় বান্দরবানের থানচিতে খিয়াং জনগোষ্ঠীর মহিলাকে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। এরপর জুলাই মাসে খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ রয়েছে।

সুহাস চাকমা বলেন, দেশজুড়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ বুয়েটের ছাত্র শ্রীশান্ত রায়কে তাঁর একটি পোস্টের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং ২২ অক্টোবর তাঁকে জেলে পাঠানো হয়। আরআরএজি’র বক্তব্য, এই ঘটনা প্রমাণ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিচারব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

সব মিলিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সংখ্যলঘু পীড়ন বাড়ছে! সবচেয়ে বড় কথা, ইউনূসের শাসনে সরকারি মদতে সংখ্যলঘু নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ করেছে ‘রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ’ ।