মাদক উৎপাদন-পাচারের অভিযোগে ভারত-পাকিস্তানকে একই তালিকায় ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের বিরুদ্ধে ফের একবার কড়া অবস্থান নিল হোয়াইট হাউস। মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া এক বার্তায় ২৩টি দেশকে মাদক উৎপাদন ও পাচারের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বলে উল্লেখ করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিস্ময়করভাবে, তালিকায় একসঙ্গে উঠে এসেছে ভারত ও পাকিস্তানের নাম। পাশাপাশি রয়েছে আফগানিস্তান, মায়ানমার, চিন, মেক্সিকো, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া সহ একাধিক দেশ।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে শোরগোল ফেলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতকে মাদক পাচারের তালিকায় পাকিস্তানের পাশে রাখা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। বিষয়টি নিয়ে আপাতত নয়াদিল্লি মুখ না খুললেও, ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, সরকার কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। কারণ, এই মন্তব্যে ভারতের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছে, এই তালিকাভুক্ত দেশগুলিকে ‘মাদক উৎপাদক ও পাচারের রুট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, সব দেশের সরকার যে মাদক দমন নীতিতে ব্যর্থ, তা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই ভূগোল, অর্থনৈতিক অসুবিধা কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের কারণে এই ধরনের সমস্যা বাড়ছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর ভাষণে আফগানিস্তান, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা এবং মায়ানমারকে আলাদাভাবে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ বলে উল্লেখ করেন মাদক দমনের প্রশ্নে।


ট্রাম্পের অভিযোগ, ফেন্টানিলের মূল কাঁচামাল সরবরাহে সবচেয়ে বড় উৎস হল চিন। এই সিন্থেটিক ড্রাগ শুধু আমেরিকাতেই নয়, গোটা বিশ্বে এক ভয়াবহ স্বাস্থ্য সংকট তৈরি করছে। অন্যদিকে, আফগানিস্তানে তালিবান সরকার প্রকাশ্যে মাদকবিরোধী অবস্থান নিলেও, বাস্তবে আফিম উৎপাদন ও পাচার অব্যাহত রয়েছে বলেই দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্পষ্ট বক্তব্য, অবৈধ মাদক ব্যবসার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ জড়িত। ফেন্টানিল পাচারের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের মধ্যে মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিষয়টি শুধু একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যও ক্ষতিকারক বলেই মনে করেন তিনি।

সম্প্রতি শুল্কনীতি নিয়ে ভারত-আমেরিকার সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হলেও, দুই দেশই আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে ফের নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে, পাকিস্তানের সঙ্গে এক আসনে বসানোয় নয়াদিল্লি কড়া বার্তা দিতেই পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।