ভারত এবং আফগানিস্তানের যৌথ বিবৃতি ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। যৌথ বিবৃতিতে জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে দাবি করা হয়েছে। এই দাবি ঘিরেই আপত্তি জানাল ইসলামাবাদ। জম্মু-কাশ্মীরকে কেন ভারতের অংশ বলা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল পাকিস্তান। এই ধরনের বিবৃতি রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে মনে করছে ইসলামাবাদ। এছাড়া জম্মু-কাশ্মীরের আইনি মর্যাদারও লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পাক সরকার। পাশাপাশি ইসলামাবাদে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করা হয়েছে।
ভারত এবং আফগানিস্তানের যৌথ বিবৃতির পর পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে নিন্দা জানিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে। আফগান বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলেও জানিয়েছে পাক সরকার। পাকিস্তান বরাবর যে কোনও পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানকে সমর্থন করেছে। বহু আফগানকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তবে এবার নতুন পথে হাঁটার কথা চিন্তাভাবনা করা হবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। অনুমতি ছাড়া আফগানিস্তানের কোনও নাগরিকের পাকিস্তানের মাটিতে থাকা উচিত নয় বলে জানানো হয়েছে।
পাক সরকারের বক্তব্য, ‘অন্য দেশের মতো পাকিস্তানেরও অধিকার রয়েছে তার দেশে বসবাসকারী বিদেশিদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। দেশের নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব রয়েছে পাক সরকারের।’ বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার সব দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে পারে না।
আফগান বিদেশমন্ত্রী বর্তমানে ভারত সফরে রয়েছেন। দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সম্পর্ক আরও মজবুত করার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে দু’দেশের তরফে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে পহেলাগাম ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী। তাঁর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর।
সন্ত্রাসবাদ এবং তা দমনে কী কী পদক্ষেপ করা দরকার তা নিয়ে এদিন মন্তব্য করেন মুত্তাকি। লশকর-এ-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের মাটি থেকে তাড়ানোর বিষয়ে বলেন। সেই সঙ্গে আফগানিস্তানে পাক হামলার নিন্দা জানান বিদেশমন্ত্রী মুত্তাকি। তাঁর দাবি, ‘২০২১ সালে যে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালিয়েছিলাম, সেই আফগানিস্তান বদলে গিয়েছে।’ মুত্তাকির পরামর্শ, ‘শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে আফগানিস্তান যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা অন্য দেশগুলিরও অনুসরণ করা উচিত।’
আফগানিস্তানে পাক হামলা নিয়ে তাঁর সতর্কবার্তা, ‘আফগানদের সাহস এবং ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। কেউ এটা করতে চাইলে, তাদের সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা এবং নেটোকে জিজ্ঞাসা করা উচিত। তারা ব্যাখ্যা করে দেবে আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলা ভাল নয়।’’