এবার শান্তি চাই: ইউক্রেন, অস্ত্রসংবরণ কর: রাশিয়া

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ঢুকল রুশ বাহিনী। গত কয়েক ঘণ্টা ধরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দুরে ছিল রাশিয়ার সেনাবাহিনী। সেখান থেকেই চলছিল লাগাতার বিমান, ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা।

পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ইউক্রেনও। খবর মিলছিল উত্তর ও উত্তর-পূর্ব প্রান্ত থেকে কিয়েভে ঢুকছে রুশ বাহিনী।

বাহিনীকে ঠেকাতে তেতেরিভ নদীর দেয় ইউক্রেন। উড়িয়ে দেওয়া হয় রাশিয়ার দু’টি ট্যাঙ্কও। গুলি করে নামানো হয় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রও।


তবুও শেষ রক্ষা হল না একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কিয়েভে রাশিয়ার সেনার একটি দল ঢুকে পড়েছে।

একটি দোতালা বাড়িতে লুকিয়ে গুলি বর্ষণ করছে তারা। তবে কিয়েভ দখল প্রসঙ্গে ইউক্রেনের তরফে সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি।

এরপরই সেতুও উড়িয়ে পুতিন অবশেষে যুদ্ধ ঘোষণার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর ইউক্রেনকে আলোচনায় বসার সুযোগ দিল মস্কো।

সংবাদসংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী লাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে তাঁরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।

তবে তার আগে ইউক্রেনের সেনাকে অস্ত্র সংবরণ করতে হবে পাল্টা প্রতিরোধ করা চলবে না।

উল্লেখ্য, গত দু’দিনের যুদ্ধে মারা গিয়েছেন ১০০-রও বেশি ইউক্রেনের সেনা, সাধারণ মানুষও। ছারখার হয়ে গিয়েছে আপাত শাস্ত্র দেশ ইউক্রেন।

এর আগে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী লাভরভ বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে তাঁরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তবে তার আগে ইউক্রেনের সেনাকে অস্ত্র সংবরণ করতে হবে।

পাল্টা প্রতিরোধ করা চলবে না রাশিয়ার এই হঠাৎ মত পরিবর্তনের কারণ কী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সেনা সংঘাত শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াচ্ছিল।

আন্তর্জাতিক মহল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁকে আলোচনায় বসার অনুরোধও জানান।

অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন যুদ্ধ ঘোষণার রাশিয়াকে দেওয়া আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অর্থ সাহায্য এবং অনুদান বন্ধ করে দেয় বহু দেশ।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, চাপে পড়েই ইউক্রেনকে আলোচনায় বসার সুযোগ দিয়েছে মস্কো।

ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের ঘোষণা করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন, তারপর থেকেই ইউক্রেনের উপর ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করতে শুরু করে দেয় রুশ সেনাবাহিনী।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভোলোদেমির জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্ট ভলাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার আহ্বান জানালেন।

শুক্রবার একটি নতুন ভিডিয়ো বার্তায় জেলেনস্কি ওই আহ্বান জানান। রাশিয়ান ভাষা তিনি ভিডিয়ো বার্তায় বলেন ‘আমি রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলতে চাই।

এখন ইউক্রেন জুড়ে যুদ্ধ চলছে মানুষের মৃত্যু বন্ধ করতে আসুন আলোচনার টেবিলে বসি।’ যুদ্ধের দ্বিতীয় দিনে পা রেখেছে রাশিয়ার আক্রমণ।

রাজধানী কিয়েভ থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে পুতিন বাহিনী। রাষ্ট্রকে বাঁচাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেন বাহিনীও।

বিশাল বাহিনীর সামনে একাই লড়াই করছে ইউক্রেন। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনার প্রস্তাব দিল মস্কো। তবে শর্তও রাখল তারা।

তার আগে অবশ্য ইউক্রেনের তরফেও আলোচনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত অস্ত্র ছেড়ে আলোচনার টেবিলে বসবে দুই দেশ, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।

শুক্রবার রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানান, ‘রাশিয়া আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি। তবে তার আগে ইউক্রেন সেনাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

মস্কোর শর্তে কি রাজি হবে কিয়েভ, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রত্যাঘাতের বার্তা দিয়েছিলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

এমনকী, দেশবাসীকেও প্রয়োজনে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। রুশ যুদ্ধবিমানে হামলাও চালিয়েছিল তারা। হামলা ঠেকাতে প্রতিরোধ গড়ছিল কিয়েভ।

কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না কার্যত রাশিয়ার সামনে খড়কুটোর মতো ভেঙে পড়েছে ইউক্রেনের রক্ষণ। তার পরই কার্যত সুর নরম করেছেন জেলেনস্কি।

এদিন জেলেনস্কি বলেন, ‘আগে হোক বা পরে রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। কীভাবে এই যুদ্ধ থামবে, সেই সমাধান সূত্র নিয়ে বৈঠক করতে হবে।

যত তাড়াতাড়ি আলোচনা শুরু হবে, ততই রাশিয়ার মঙ্গল।

দ্রুত আলোচনা শুরু হলে রাশিয়ারই কম ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। যুযুধান দু’পক্ষের গলায় আলোচনার সুর শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হচ্ছে বিশ্ববাসী।

তবে সমঝোতার টেবিলে পৌঁছানোর পথে সবচেয়ে বড় কাঁটা রাশিয়ার চাপানো শর্ত, এককথায় সকলেই মানছে সেটা ।

তাহলে কি আত্মসমর্পণের পথে ইউক্রেন? শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কিয়েভের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে রুশ সেনা।

এরই মধ্যে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে ইউক্রেন সেনার আত্মসমর্পণের ছবি, যা নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

সেই ভিডিওর সত্যতা নিয়ে সংশয় থাকলেও পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে, আত্মসমর্পণ ছাড়া কি আর উপায় রয়েছে ইউক্রেনের? যদিও ইউক্রেনের দাবি, বড়সড় প্রতিরোধ গড়তে পেরেছে তারা।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই ইউক্রেনে ঝাঁপিড়ে পড়ে রাশিয়ান ফৌজ। দিনভর নানা জায়গায় হামলা চালিয়ে সন্ধের দিকে রাজধানী কিয়েবের দিকে এগোতে থাকে তারা।

কিয়েভ, খারকভের বিমানঘাঁটি দখল করে সেসব তছনছ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্ক জানিয়েছেন, প্রথম দিনের যুদ্ধে ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গোটা বিশ্বই সন্তুস্ত হয়ে তাকিয়ে রয়েছে ইউক্রেনের দিকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অবস্থা শোধরানোর মতো সম্ভাবনা তৈরি হয়নি।

দোনবাস পেরিয়ে শুক্রবার বেলা রুশ সীমান্ত পেরিয়ে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। লাগাতার চলছে গোলাগুলি। মাথার উপরে পাক খাচ্ছে রুশ বিমান।

তবে রুশ বাহিনীকে তাঁরা অনেকটা রুখে দিতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি।

তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোর চারটে থেকেই রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। তবে অধিকাংশ জায়গাতেই রুশ সেনাকে আটকে দিয়েছে ইউক্রেন সেনা।

এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে ইউক্রেনে ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ার হামলায়। তাঁদের মধ্যে ১০ জন সেনা আধিকারিক রয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৩১৬ জন।

এদিকে বাইডেন জানিয়েছেন, যদি পুতিন ইউক্রেনের পরে কোনও ন্যাটো গোষ্ঠীভুক্ত দেশে ঢুকে পড়ে তাহলে তাঁদের জবাব দেবে ওয়াশিংটন। ক্রমশই ঘোরালো হচ্ছে পরিস্থিতি। প্রশ্ন উঠছে, আত্মসমর্পণ ছাড়া কি আর উপায় রয়েছে ইউক্রেনের?

যদিও ইউক্রেনের দাবি, বড়সড় প্রতিরোধ গড়তে পেরেছে তারা। শুক্রবার ভোর চারটে থেকেই রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে।