ক্যারিবিয়ান জুড়ে তাণ্ডব চালিয়ে ধ্বংসস্তূপের ছবি রেখে গেল হারিকেন মেলিসা

ছবি: এএনআই

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়ে গেল হারিকেন মেলিসা। সমুদ্রতীরবর্তী দ্বীপগুলিতে অগণিত বাড়িঘর ধ্বংস্তূপে পরিণত, জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত এবং বহু স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার তৎপরতা। স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে একাধিক দেশের উদ্ধারকারী দল ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবল গতিবেগে আছড়ে পড়া এই ঝড়ের প্রভাবে বহু দ্বীপে জলবন্দি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলে কয়েক মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ায় বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা সম্পূর্ণ অচল। বিপর্যস্ত বাসিন্দাদের অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে সরানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, হাসপাতালগুলির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

ঝড়ের তাণ্ডব যত বাড়ছে, ততই আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতার উদ্যোগ শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকারী সংগঠন, মানবিক সহায়তা দপ্তর এবং সঙ্ঘ-সংস্থাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপগুলির জন্য ত্রাণ, ওষুধ, বিশুদ্ধ জল এবং জরুরি সামগ্রী পাঠাচ্ছে। কয়েকটি দেশ থেকে পাঠানো উদ্ধারকারী দল ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়া সড়ক এবং পরিকাঠামো পরিষ্কার করে বিপদগ্রস্ত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে।


প্রশাসন মনে করছে, পরবর্তী কয়েক দিনে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত ছবি আরও স্পষ্ট হবে। বহু অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখনও পর্যন্ত অনেক তথ্য সামনে আসেনি। তবে দপ্তরগুলির সমন্বয়ে বড়সড় ত্রাণ-বহনকারী নৌযান ও বিমান পাঠানো হচ্ছে, যাতে দ্রুততম সময়ে খাদ্য, জল এবং চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়।

ঝড়ের পরে পুনর্গঠন কতটা সুষ্ঠুভাবে এগোতে পারে, তা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সহায়তার ধারাবাহিকতার উপর। স্থানীয় মানুষের কথায়, ‘এ রকম তাণ্ডব বহু বছর দেখা যায়নি।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে এ ধরনের ভয়াবহ ঝড়ের সম্ভাবনা আরও বেড়ে গিয়েছে।