হংকংয়ের অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৯৪, দ্বিতীয় দিনেও ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি

হংকংয়ের তাই পো এলাকার ওয়াং ফুক কোর্ট বহুতল আবাসনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দ্বিতীয় দিনেও চলছে তল্লাশি অভিযান। বুধবার দুপুরে শুরু হওয়া এই ভয়াবহ আগুনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪-এ। গত কয়েক দশকে হংকং শহরে এমন মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের নজির নেই বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তারা।

বুধবার আগুন লাগে ৩২ তলা আবাসনের বাইরের বাঁশের মাচা এবং নির্মাণের জন্য ব্যবহার হওয়া জালে। প্রবল হাওয়া সেই আগুন মুহূর্তে উপরের তলায় ছড়িয়ে দেয় এবং পরে আগুন ছড়িয়ে যায় আটটি ব্লকের মধ্যে সাতটিতেই। ঘিঞ্জি ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা আবাসনগুলির কারণে আগুনের গতি আরও বেড়ে যায় বলে ধারণা দমকলের।

বৃহস্পতিবার সকালে সমস্ত আবাসনগুলিতে যেন এক গভীর কালো খোলসের মতো দাঁড়িয়ে ছিল। প্রশাসনের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু জানলার ভেতরে এখনও ক্ষীণ আগুন দপদপ করছে। উদ্ধারকারী দলগুলি টর্চ নিয়ে ঘরে ঘরে তল্লাশি চালাচ্ছে। টাওয়ারগুলির কিছু অংশ থেকে ক্রমাগত ধোঁয়া বের হচ্ছে। শতাধিক বাসিন্দাকে রাতভর রাখা হয় অস্থায়ী শিবিরে। আরও অনেকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নিখোঁজ পরিবার-পরিজনের খোঁজে। এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি, তাঁদের মধ্যে ১১ জন দমকলকর্মী।


হংকংয়ের প্রশাসনিক প্রধান জন লি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মোট ২৭৯ জন বাসিন্দার সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী ব্রিফিংয়ে কতজন এখনও নিখোঁজ, তার আপডেট সংখ্যা জানায়নি কর্তৃপক্ষ।

দমকল পরিষেবার অপারেশন বিভাগের উপ-পরিচালক ডেরেক আর্মস্ট্রং চ্যান জানিয়েছেন, আগুন নেভানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন মূল লক্ষ্য ‘তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান’। তাঁর কথায়, ‘উপরের তলা থেকে ক্রমাগত ধ্বংসস্তূপ খসে পড়ছিল। কিছু জায়গায় মাচা ধসে গেছে। তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি, চারদিকে অন্ধকার, পাশাপাশি ধসে পড়া মাচা ও ধ্বংসস্তূপ জরুরি যানবাহনের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে— সব মিলিয়ে ভিতরে ঢোকাই আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে।’

মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকানও। হংকংয়ের বিশপের উদ্দেশে পাঠানো এক বার্তায় পোপ লিও চতুর্দশ নিহতদের আত্মীয়স্বজন ও অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের জন্য প্রার্থনার কথা জানিয়েছেন।